অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কালোটাকা সাদা করার সুযোগ না দিলে টাকাগুলো সিস্টেমের মধ্যে থাকে না। প্রদর্শিত হয় না। এসব টাকা অফিশিয়ালি এলে অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়ে। বিনিয়োগ বাড়ে।’
এবারের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখার বিষয়ে কিছু বলেননি। ফলে এ সুযোগ নতুন অর্থবছরে থাকছে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এক দিন পর বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল থাকছে কি না, তা জানা যাবে এক মাসের মধ্যেই। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে নানা মত আছে। আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি। এক মাস সময় লাগবে।’
আগামী ৩০ জুন প্রস্তাবিত ২০২১-২১ অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদন হবে। গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে এই বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘এবারের বাজেট বক্তৃতায় কালোটাকা সাদা করা নিয়ে কিছু বলা হয়নি। এমনকি অর্থ বিলে কিছু উল্লেখ নেই। কিন্তু আপনি বাজেটের আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যত দিন অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত অর্থ থাকবে, তত দিন এ সুযোগ অব্যাহত থাকবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে আপনি কি মত পরিবর্তন করেছেন?’
এর সরাসরি জবাব না দিয়ে অর্থমন্ত্রী উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘এ প্রশ্নের সঙ্গে তখন আপনি একমত ছিলেন কি না?’
এ সময় ওই সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি একমত ছিলাম কি না, সেটা বড় কথা নয়, আপনি মত পরিবর্তন করেছেন কি না, তা জানতে চাই।’
তখন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কালোটাকা আর অপ্রদর্শিত অর্থ এক নয়। কালোটাকার উৎস ঘুষ ও দুর্নীতি। অন্যদিকে অপ্রদর্শিত মানে যে টাকা প্রদর্শন করা হয়নি। তবে এই নিয়ে নানা মতামত আছে। কেউ কালোটাকা বৈধ করার সুযোগের পক্ষে আবার কেউ বিপক্ষে।’
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। অনেকে বলছেন, এ সুবিধা অব্যাহত থাকলে সমাজে ভারসাম্য বজায় থাকে না। তবুও আমরা আরও একটি মাস দেখতে চাই। কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া যদি লাভজনক হয়, তাহলে অব্যাহত রাখার জন্য বিষয়টি আলোচনা করা হবে। এর জন্য এক মাস সময় লাগবে।’
এ সময় অবশ্য মুস্তফা কামাল আরও দাবি করেন, ‘কালোটাকা সাদা করার সুযোগ না দিলে টাকাগুলো সিস্টেমের মধ্যে থাকে না। প্রদর্শিত হয় না। এসব টাকা অফিশিয়ালি এলে অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়ে। বিনিয়োগ বাড়ে।’
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে কালোটাকা সাদা টাকা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে, যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ জুন।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেছেন, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার করদাতা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন, যার পরিমাণ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর থেকে সরকার ট্যাক্স পেয়েছে ১ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা।