দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সম্প্রতি ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে পুঁজিবাজার। বাড়তে দেখা যাচ্ছে পুঁজিবাজারের সবচেয়ে শক্তিশালী খাত হিসাবে পরিচিত ব্যাংকের শেয়ারদর। পাশাপাশি বাড়ছে বিমা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন, টেলিকমিউনিকেশন, বিবিধসহ সব ধরনের কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটদর।
প্রতিনিয়ত পুঁজিবাজারে বিনয়োগকারীর অংশগ্রহণের সঙ্গে সূচকও বাড়ছে। একইভাবে বাড়ছে বাজার মূলধন ও লেনদেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সূচক বৃদ্ধি পেয়ে ৩৯ মাস আগের অবস্থানে চলে গেছে। পাশাপাশি পাঁচ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে বাজার মূলধন।
এদিন বেড়েছে পুঁজিবাজারের সব সূচক। একই সঙ্গে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিএসইএক্স বা প্রধান সূচক দুই বছর তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে উঠেছে। আর টাকার পরিমাণে লেনদেন চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়েছে।
গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯৮৫ পয়েন্টে। এর মধ্যে দিয়ে ডিএসইর এ সূচকটি তিন বছর তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে উঠেছে। এর আগে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ডিএসইএক্স সূচকটি পাঁচ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে অবস্থান করে।
সূচকের পাশাপাশি গতকাল উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে বাজার মূলধন। একদিনে বাজার মূলধন বাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে দিয়ে গতকাল ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের বাজার মুলধন পাঁচ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করে। দিন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় পাঁচ লাখ দুই হাজার দুই হাজার কোটি টাকা।
এদিকে বাজার ভালো থাকায় গতকাল লেনদেনও বেশ গতি দেখা যায়। এদিন ডিএসইতে দুই হাজার ৩৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়। এ লেনদেন ছিল গত চার মাস ১০ দিন বা ৮৭ কার্যদিবসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ডিএসইতে এর আগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি আজকের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৩৮৪ কোটি টাকার।
এদিকে বিষয়টি আলাপ করলে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, পুঁজিবাজার এখন খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে। এ পরিস্থিতি থাকলে সামনের দিনগুলোয় আরও ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আমরা বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারের স্বার্থে কাজ করছি। বর্তমানে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বেড়েছে। তবে বাজারের উন্নয়নের জন্য আমাদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
একই বিষয়ে ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, পুঁজিবাজার এখন ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে। এটা ভালো লক্ষণ। এ রকমের পরিবেশ থাকলে এখানে নতুন বিনিযোগকারীদের আগমন ঘটে। তারাও চান বাজারে বিনিয়োগ করতে। তবে এ ধরনের বাজারে কারসাজি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কারণ বাজার ভালো হলে কিছু মানুষ এখান থেকে সুযোগ নিতে চান। এর যথেষ্ট নজির রয়েছে। তাই এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার বিকল্প নেই।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বিনিয়োগকারীরা বলেন, বর্তমানে বাজারের পরিবেশ ভালো। তবে এতে তারা উচ্ছ্বসিত নন। কারণ তারা চান দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল বাজার।