সাধারণ বীমার ২৩টি কোম্পানি এ পর্যন্ত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরের ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ডিভিডেন্ড ঘোষণার আরও বাকি রযেছে ১৫টি কোম্পানি। বীমা খাতে এবার ডিভিডেন্ডের চমক থাকায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা ১৫ বীমার শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ নজরে রয়েছে।
ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১১টি আগের বছরের চেয়ে বেশি ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ১১টির ডিভিডেন্ড আগের বছরের সমপরিমাণ রয়েছে। আর ১টির ডিভিডেন্ড কমেছে। কোম্পানিগুলো ১০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এখন পর্যন্ত বীমা খাতে কোন কোম্পানি ১০ শতাংশের কম ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।
খাতটির আরও ইতিবাচক দিক হল, ডিভিডেন্ড প্রবৃদ্ধির সঙ্গে মুনাফার প্রবৃদ্ধি। এখাতে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা ২৩টি কোম্পানির মধ্যে সমাপ্ত অর্থবছরে ২০টিরই মুনাফা বেড়েছে।
অন্যদিকে, ডিভিডেন্ড ঘোষণার ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ২২টি কোম্পানি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) মুনাফা প্রকাশ করেছে। এরমধ্যে ১৯টি কোম্পানিরই মুনাফায় ঊর্ধ্বগতি রয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ বীমার কোম্পানিগুলো গত এক বছর যাবত দর বৃদ্ধির চমক দেখাচ্ছে। এবার দর বৃদ্ধি চমকের পাশাপাশি ডিভিডেন্ড এবং মুনাফা বৃ্দ্ধির চমক দেখাচ্ছে।
এদিকে, সাধারণ বীমার আরও ১৫টি কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি কোম্পানি সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর, ২০২০) শেয়ার প্রতি মুনাফা করেছে ১ টাকা থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত। এতে দেখা যায়, কোম্পানি ১০টির এবছর বেশি ডিভিডেন্ড দেয়ার সক্ষমতা ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে। এ কারণে ১০ কোম্পানির মুনাফা ও ডিভিডেন্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা বেড়েছে।
এছাড়া, বাকি ৫টি কোম্পানির ডিভিডেন্ড নিয়েও বিনিয়োগকারীরা বেশ আশাবাদী। কারণ হিসাবে তারা বলছেন, এ পর্যন্ত যে ২৩টি কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, কোম্পানিগুলোর প্রায় সবগুলোই অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২০) বেশি মুনাফা করেছে। সঙ্গত কারণেই বিনিয়োগকারীরা ৫টি কোম্পানিরও মুনাফা শেষ প্রান্তিকে বেশি প্রত্যাশা করছেন। সেই কারণে কোম্পানিগুলোর বেশি ডিভিডেন্ডও প্রত্যাশা করছেন।
যে ১০টি কোম্পানি সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’২০-মাছ’২১) আগের বছরের চেয়ে বেশি ডিভিডেন্ড দেয়ার সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, সেগুলো হল-পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, প্রগতি ইন্সুরেন্স, এশিয়া ইন্সুরেন্স, ঢাকা ইন্সুরেন্স, সোনারবাংলা ইন্সুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সুরেন্স, রিপাবলিক ইন্সুরেন্স, ফিনিক্স ইন্সুরেন্স, নর্দার্ন ইন্সুরেন্স ও মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্স।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুনাফায় শীর্ষে রয়েছে পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স। নয় মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ১ পয়সা। এরপর রয়েছে-প্রগতি ইন্সুরেন্সের ২ টাকা ৯৮ পয়সা, এশিয়া ইন্সুরেন্সের ২ টাকা ৬৯ পয়সা, ঢাকা ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ৯০ পয়সা, সোনারবাংলা ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ৮৬ পয়সা, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ৮৫ পয়সা, রিপাবলিক ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ৫১ পয়সা, ফিনিক্স ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ৪৬ পয়সা, নর্দার্ন ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ৪২ পয়সা এবং মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্সের ১ টাকা ১৫ পয়সা।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে ডিভিডেন্ড দিয়েছে পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স ২০ শতাংশ ক্যাশ, প্রগতি ইন্সুরেন্স ২২ শতাংশ ক্যাশ, এশিয়া ইন্সুরেন্স ১০ শতাংশ ক্যাশ, ঢাকা ইন্সুরেন্স ১৫ শতাংশ ক্যাশ, সোনারবাংলা ইন্সুরেন্স ১০ শতাংশ ক্যাশ, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সুরেন্স ১০ শতাংশ ক্যাশ, রিপাবলিক ইন্সুরেন্স ৭ শতাংশ ক্যাশ+৭ শতাংশ স্টক, ফিনিক্স ইন্সুরেন্স ১২ শতাংশ ক্যাশ, নর্দার্ন ইন্সুরেন্স ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্স ৭ শতাংশ ক্যাশ।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে রোববার (২৩ মে) স্টান্ডার্ড ইন্সুরেন্স ও মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্সের ডিভিডেন্ড ঘোষণার জন্য বোর্ড সভা রয়েছে। আর রিপাবলিক ইন্সুরেন্সের ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার (২৫ মে)।
১৫ সাধারণ বীমার ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর’২০) শেয়ার প্রতি মুনাফা ও ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ অর্থবছরে দেয়া ডিভিডেন্ড চিত্র নিচে তুলে ধরা হল:
ক্রমিক | ইন্সুরেন্সের নাম | ২০২০ | ২০১৯ |
জানু–সেপ্টেম্বর | ডিভিডেন্ড | ||
১ | পাইওনিয়ার | ৬.০১ | ২০ ক্যাশ |
২ | প্রগতি | ২.৯৮ | ২২ ক্যাশ |
৩ | এশিয়া | ২.৬৯ | ১০ ক্যাশ |
৪ | ঢাকা | ১.৯০ | ১৫ ক্যাশ |
৫ | সোনারবাংলা | ১.৮৬ | ১০ ক্যাশ |
৬ | স্ট্যান্ডার্ড | ১.৮৫ | ১০ ক্যাশ |
৭ | রিপাবলিক | ১.৫১ | ৭ ক্যাশ +৭ স্টক |
৮ | ফিনিক্স | ১.৪৬ | ১২ ক্যাশ |
৯ | নর্দার্ন | ১.৪২ | ১০ ক্যাশ |
১০ | মার্কেন্টাইল | ১.১৫ | ৭ ক্যাশ |
১১ | গ্লোবাল | ১.০৬ | ৫ ক্যাশ+৫ স্টক |
১২ | দেশ | ০.৮৩ | — |
১৩ | পূরবী | ০.৯২ | ১০ ক্যাশ |
১৪ | এক্সপ্রেস | ০..৮৪ | ৫ক্যাশ (অর্ন্তবর্তী) |
১৫ | ফেডারেল | ০.৫৮ | ৫ ক্যাশ |