1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
রিং শাইনের প্লেসমেন্ট শেয়ার বাজেয়াপ্ত করবে বিএসইসি
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫০ পিএম

রিং শাইনের প্লেসমেন্ট শেয়ার বাজেয়াপ্ত করবে বিএসইসি

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১
Ring-Shiner-Textiles

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইলস লিমিটেডের প্লেসমেন্ট শেয়ার বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আগে প্রাইভেট অফারের মাধ্যমে উত্তোলিত মূলধনের বিপরীতে যেসব বিনিয়োগকারী টাকা দেননি, সেসব শেয়ার এবং এগুলোর বিপরীতে ইস্যু করা বোনাস শেয়ার বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই অর্থ কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে কমিশন। গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭৭৪তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

কমিশন সভা শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রিং শাইন টেক্সটাইলসকে অব্যবহূত আইপিও তহবিল থেকে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শ্রমিক ছাঁটাই বাবদ ১৫ কোটি টাকা, বেপজার পাওনা ৩ কোটি, তিতাস গ্যাসের পাওনা সাড়ে ৩ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১০ কোটি ও ঢাকা ব্যাংকের ৬ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ এবং বিবিধ খাতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এ তহবিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইপিও প্রসপেক্টাসে বর্ণিত তহবিল ব্যয় পরিকল্পনায় পরিবর্তন ও সংশোধনের বিষয়ে কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া আইপিওর তহবিল ব্যয় পরিকল্পনায় পরিবর্তনের বিষয়টি ৫১ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারের উপস্থিতিতে সাধারণ সভার মাধ্যমে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আইপিওর মাধ্যমে ২০১৯ সালে খায়রুল কমিশনের আমলে দেশের পুঁজিবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করে রিং শাইন টেক্সটাইলস। কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির সময় এর বিভিন্ন ধরনের আর্থিক তথ্যের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিশেষ করে ফিক্সড পদ্ধতিতে এত বড় অংকের অর্থ উত্তোলনের বিষয়টি নিয়ে সে সময় বাজারে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। সাধারণত বড় অংকের অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে অভিহিত মূল্যের সঙ্গে প্রিমিয়ামসহ বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত করা হয়। তবে এক্ষেত্রে রিং শাইন ছিল ব্যতিক্রম। আইপিওতে আসার আগে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ২৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৭ কোটি ৫১ লাখেরও বেশি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২০১৮ সালে ২৭৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। আইপিওর মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের পর কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৪৩৫ কোটিতে উন্নীত হয়। আইপিওতে আসার পরেই ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এতে এর পরিশোধিত মূলধন বেড়ে ৫০০ কোটিতে দাঁড়ায়। প্রাইভেট অফার, আইপিও ও বোনাস লভ্যাংশ মিলিয়ে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যেই প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। অথচ দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে বিদেশী ক্রয়াদেশ কমে যাওয়া, কাঁচামাল স্বল্পতা ও তহবিল সংকটের কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বরে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয় রিং শাইন টেক্সটাইলস।

সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় রিং শাইন টেক্সটাইলের অবস্থা পরিবর্তনে হস্তক্ষেপ করে শিবলী কমিশন। এ বছরের জানুয়ারিতে কোম্পানিটিকে পুনরায় উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে ৭ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের মাধ্যমে এর পর্ষদ পুনর্গঠন করে বিএসইসি। মেজবাহ উদ্দিনকে চেয়ারম্যান করে পুনর্গঠিত পর্ষদের সদস্য করা হয় ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ড. মোহাম্মদ সগীর হোসেন খন্দকার, ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ড. মো. ফিরোজ আলী, ইসতাক আহমেদ শিমুল ও আব্দুর রাজ্জাককে। পুনর্গঠিত পর্ষদকে কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার উন্নয়নসহ ও সার্বিক বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি কোম্পানিটির আর্থিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য গঠিত বিএসইসির তদন্ত কমিটির সদস্যরা এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কারখানা পরিদর্শনের মাধ্যমে এর সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। মূলত কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধের কারণ, প্রকৃত উৎপাদনের অবস্থা, উৎপাদন সক্ষমতা, মজুদ পণ্যের পরিমাণ, ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক পরিকল্পনাসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় দেখতেই কারখানা পরিদর্শন করেছেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। সর্বশেষ গতকালের কমিশন সভায় জাল শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানির তহবিলে কোনো অর্থ জমা না দিয়েই যারা এর কাগুজে মালিকানা কিনে নিয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সাভারের গণকবাড়িতে ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) ৬০টি প্লটে রিং শাইন টেক্সটাইলসের কারখানা গড়ে উঠেছে। ৯০ বিঘা জায়গার ওপর ১২টি ভবনে কোম্পানিটির কার্যক্রম চলছে। ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসা রিং শাইন টেক্সটাইলস বিভিন্ন ধরনের গ্রে ও ফিনিশড ফ্লিস ফ্যাব্রিক উৎপাদন ও বাজারজাতের পাশাপাশি গার্মেন্টের জন্য ইয়ার্ন ডাই করে থাকে। ডেনিম ফ্যাব্রিকসের চাহিদার কারণে আইপিওর অর্থে একটি নতুন ডেনিম ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল রিং শাইন টেক্সটাইলসের।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ