প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও থেকে পুঁজিবাজার থেকে তোলা ১৫০ কোটি টাকা অবশেষে ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে রিং সাইন টেক্সটাইল। তবে এর একটি বড় অংশই যাবে কোম্পানির পাওনা পরিশোধে।
পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করার প্রায় চার মাস পর বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
জানানো হয়েছে, টাকা থেকে ছাটাইকৃত কর্মীদের জন্য ১৫ কোটি টাকা, বেজপার পাওনা তিন কোটি আর তিতাস গ্যাসের পাওনা সাড়ে তিন কোটি টাকা পরিশোধ এবং আরও নানা খাতে আরও আড়াই কোটি টাকা খরচ করবে। সব মিলিয়ে পাওনা পরিশোধেই খরচ হবে ২৪ কোটি টাকা।
এর বাইরে প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে ১০ কোটি টাকা এবং ঢাকা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে যাবে ৬ কোটি টাকা।
অর্থাৎ আইপিও থেকে তোলা টাকার একটি বড় অংশ দিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগই নেয়া যাবে না। যদিও আইপিওর মাধ্যমে তোলা অর্থই সিংহভাগই উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করার কথা ছিল। কোম্পানিটি আইপিও প্রক্রিয়ায় ১৫০ কোটি টাকা তুলেছিল।
প্রসপেক্টাসে তহবিল ব্যবহারের যে কথা বলা ছিল, তার বদলে অন্য খাতে ব্যয় করার জন্য আইনি বাধাও দূর করা হয় কমিশন সভায়।
বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ারধারীদের উপস্থিতিতে সাধারণ সভা করারও অনুমোদন দেয়া হয়।
কোম্পানিটির আইপিও পর্যায়ে প্লেসমেন্ট শেয়ারের মাধ্যমে উত্তোলিত মূলধনের বিপরীতে যেসব বিনিয়োগকারী এখনও টাকা দেননি, সেসব শেয়ার ও তার বিপরীতে ইস্যু করা বোনাস শেয়ার বাজেয়াপ্ত করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলো কোম্পানির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন থেকে বাদ দেয়া হবে।
২০১৯ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরে শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয় রিং সাইন। তবে এরপর সেটি লোকসানি কোম্পানিতে পরিণত হয়ে যায়। আর ২০২০ সালের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত সভাও করা হয়নি। পাশাপাশি ২০১৯ সালের পর কোনো প্রান্তিকের হিসাবও দেয়া হয়নি।
২০১৯ সালে আইপিওর মাধ্যমে টাকা তোলার পর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ চেষ্টার অভিযোগ উঠে। এরপর বিএসইসি ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়।
পাশাপাশি লোকসানি কোম্পানিটিকে বাঁচাতে গত ২৬ জানুয়ারি পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। নতুন পর্ষদ কোম্পানি চালুও করেছে।
বর্তমানে সাত জন স্বতন্ত্র পরিচালক কোম্পানিটি চালাচ্ছেন, যার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মেজবাহ উদ্দিন।
রিং সাইনের পুনগঠিত পর্ষদে আরও আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সগির হোসাইন খন্দকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, জনতা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ আলী, পাওয়ার গ্রিডের স্বতন্ত্র পরিচালক ইসতাক আহমেদ শিমুল এবং অ্যাভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের সাবেক মহা ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক।