আগেরদিন পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন বড় উত্থান হলেও একদিন পরই আজ (২০ মে) সুচক ও লেনদেনে বড় পতন হয়েছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৬০ পয়েন্ট এবং লেনদেন কেমেছে আগেরদিনের তুলনায় ৪৪৭ কোটি টাকা। আগেরদিন ডিএসইর সূচক বেড়েছিল প্রায় ৪৪ পয়েন্ট এবং লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার কোটি টাকার উপরে। আজ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৬৫২ কোটি টাকা কিছু বেশি।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আজ ডিএসইতে আট খাতের শেয়ারে বড় পতন হয়েছে। যে কারণে একদিন পরই বাজার কাহিল চেহারায় আর্বিভূত হয়েছে। খাতগুলো হলো- বিমা, বস্ত্র, আর্থিক, ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন, জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং প্রকৌশল খাত।
বস্ত্র খাত: বস্ত্র খাতে লেনদেন হওয়া ৫৫টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর কমেছে ৪৪টির বা ৮০ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ৭টির বা ১২.৭৩ শতাংশ কোম্পানির। আর দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টি বা ৭.২৭ শতাংশ কোম্পানির। দর কমার উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলো হলো- সিএন্ডএ টেক্সটাইলের ৪ শতাংশ, মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিংয়ের ৪ শতাংশ, নিউ লাইনের ৩.৯ শতাংশ, ফ্যামিলি টেক্সটাইলের ৩.৪৪ শতাংশ, আলিফের ৩.২৬ শতাংশ, জাহিন টেক্সটাইলের ৩.১৭ শতাংশ, ডেলটা স্পিনিংয়ের ৩.০৬ শতাংশ, ড্রাগন সোয়েটারের ২.৪৫ শতাংশ এবং ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ২.৩৩ শতাংশ।
আর্থিক খাত: আর্থিক খাতে লেনদেন হওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৭টির বা ৭৭.২৭ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ২টির বা ৯.০৯ শতাংশ কোম্পানির। আর দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টি বা ১৩.৬৩ শতাংশ কোম্পানির। দর বেশি কমেছে ফার্স্ট ফাইনান্সের ৫.৩৩ শতাংশ, ফাস ফাইনান্সের ৫.০৮ শতাংশ, ইউনাইটেড ফাইনান্সের ৪.৫৭ শতাংশ, জিএসপি ফাইনান্সের ৪.৩২ শতাংশ, প্রাইম ফাইনান্সের ৩.৯২ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ৩.৭৫ শতাংশ, বেলিজিংয়ের ৩.৫৫ শতাংশ, লংকাবাংলা ফাইনান্সের ৩.২৮ শতাংশ, আইডিএলসি’র ২.২৫ শতাংশ।
ব্যাংক খাত: ব্যাংক খাতে আগেরদিন শতভাগ কোম্পানির দর বাড়ার বিরল ঘটনা ছিল। আজ খাতটিতে লেনদেন হওয়া ৩০টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর কমেছে ২৩টির বা ৭৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ৬টির বা ২০ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১টি বা ৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। দর কমার উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলো হলো- প্রাইম ব্যাংকের ৭.৩০ শতাংশ, ব্র্যাক ব্যাংকের ৪.৮ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৩.৩৫ শতাংশ, ইস্টার্ণ ব্যাংকের ৩.৩৯ শতাংশ, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ৩.২২ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৩.১৫ শতাংশ, সিটি ব্যাংকের ২.৯৫ শতাংশ, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংকের ২.৮৪ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের ২.৫৯ শতাংশ, যমুনা ব্যাংকের ২.৫০ শতাংশ।
ওষুধ ও রসায়ন খাত: ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩০টি কো্ম্পানির মধ্যে দর কমেছে ২২টির বা ৭৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ৪টির বা ১৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টি বা ১৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। দর বেশি কমেছে বিকন ফার্মার ৩.১৯ শতাংশ, এসিআইয়ের ২.৮৬ শতাংশ, অ্যাডভেন্ট ফার্মার ১.৮২ শতাংশ, ইন্দোবাংলা ফার্মার ১.৭৫ শতাংশ, রেনাটার ০.৯২ শতাংশ।
জ্বালানি খাত: জ্বালানি খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৬টির বা ৭২.৭৩ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ৪টির বা ১৮.১৮ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি বা ৯.০৯ শতাংশ কোম্পানির। দর উল্লেখযোগ্য কমার কোম্পানিগুলো হলো-ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ৪.১৮ শতাংশ, জিবিবি পাওয়ারের ৪.২৪ শতাংশ, শাহজিবাজার পাওয়ারের ২.৩৭ শতাংশ, ডেসকো’র ১.৪৫ শতাংশ।
বিমা খাত: সাধারণ বিমা ও জীবন বিমা খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৩৩টির বা ৬৬ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ১৩টির বা ২৬ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টি বা ৭.২৭ শতাংশ কোম্পানির। দর বেশি কমেছে প্রাইম লাইফের ৬.৮৮ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্সের ৫.৮৫ শতাংশ, কর্ণফুলি ইন্সুরেন্সের ৫.৫৯ শতাংশ, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ৫.৩৬ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ৪.৮৫ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্সের ৪.৫৪ শতাংশ, বিজিআইসির ৪.৩৩ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্সুরেন্সের ৪.২৯ শতাংশ, নিটল ইন্সুরেন্সের ৪.১৬ শতাংশ।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত: খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে দর কমেছে ১৩টির বা ৬৫ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ৫টির বা ২৫ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কোম্পানির। দর কমার প্রধান কোম্পানিগুলো হলো- মেঘনা কনডেন্স মিল্কের ৬.৫৫ শতাংশ, মেঘনা পেটের ৪.৬৫ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৪.২৪ শতাংশ, ফুয়াং ফুডের ২.৬৬ শতাংশ, আরডি ফুডের ১.০৭ শতাংশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো’র .৯৪ শতাংশ।
প্রকৌশল খাত: প্রকৌশল খাতে দর কমেছে ২৭টির বা ৬৫.৮৬ শতাংশ কোম্পানির। বেড়েছে ৭টির বা ১৭.০৭ শতাংশ কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৭টি বা ১৭.০৭ শতাংশ কোম্পানির দর। দর হ্রাস পাওয়া প্রধান কোম্পানিগুলো হলো- মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ ৮.০৩শতাংশ, সাইফ পাওয়ারের ৩.৪৩ শতাংশ, ডমিনেজ স্টিলের ২.৮৮ শতাংশ, গোল্ডেনসনের ২.৭৭ শতাংশ, এসএস স্টিলের ২.৫১ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের ১.৮০ শতাংশ।