গত এক বছরে সাধারণ বীমার শেয়ারদর বেড়েছে কয়েকগুণ। কিছু কিছু কোম্পানির দর বেড়েছে ৮ থেকে ১০ গুণ। তবে এ সময়ে জীবন বীমার শেয়ারদর সেভাবে বাড়েনি।
যদিও গত এক বছরে সাধারণ বীমার মুনাফায় বড় অগ্রগতি হয়েছে। অন্যদিকে জীবন বীমার পারফরমেন্সেও বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
গতবছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর হতে সাধারণ বীমার শেয়ারে উত্থান হয়। চলে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত। তারপর সংশোধন। সম্প্রতি সাধারণ বীমার শেয়ার দরে আবারও উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা একে দ্বিতীয় ঢেউ বলে অভিহিত করছেন।
সাধারণ বীমার দেখাদেখি গত সপ্তাহে জীবন বীমার শেয়ারও ঝলক দিয়ে উঠে। গেল সপ্তাহে বেশিরভাগ জীবন বীমার শেয়ারদর যেমন বেড়েছে। এমনকি দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার জীবন বীমার শেয়ারও নড়েচড়ে উঠেছে।
গেল সপ্তাহে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর লেনদেনও বেড়েছে। কিছু কিছু কোম্পানির লেনদেন রেকর্ড উচ্চতা ছুঁয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-রূপালী লাইফ, মেঘনা লাইফ ও সন্ধানী লাইফ।
রূপালী লাইফ ইন্সরেন্স: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গেল সপ্তাহের আগ পর্যন্ত রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে দুই লাখের নিচে। গত ১৯ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ার হঠাৎ লাফ দিয়েছিল। ওইদিন শেয়ারটি লেনদেন হয়েছিল ৮ লাখ ৯৪ হাজার শেয়ার। এরপর লেনদেন ফের ২ লাখের নিচেই থাকে।
গত সপ্তাহের শুরু থেকে কোম্পানিটির লেনদেনে হঠাৎ ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়। সপ্তাহের প্রথমদিন রোববার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৬ লাখ ৬১ হাজার, সোমবার ১১ লাখ ৫৮ হাজার, বুধবার ৩৯ লাখ ২ হাজার এবং বৃহস্পতিবার ২০ লাখ ২৯ হাজারের বেশি শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৮০ লাখ ৪২ হাজারের বেশি। যা সপ্তাহভিত্তিক গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন।
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ হিসাববছরে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ ক্যাশ ও ২ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।
রূপালী লাইফ ইন্সরেন্সের শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার ৭২৩টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩২.০৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪.০১ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.২৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫৩.৬৫ শতাংশ শেয়ার।
গত এক বছরে রূপালী লাইফের সর্বোচ্চ দর ছিল ৭২ টাকা ৯০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দর ছিল ৩৯ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দর হয়েছে ৬৬ টাকা ৯০ পয়সা।
মেঘনা লাইফ ইন্সরেন্স: চলতি বছরজুড়েই মেঘনা লাইফের লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ ৪ লাখ। গত সপ্তাহে কোম্পানির লেনেদেনে হঠাৎ ঝলক দেখা দেয়। সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ২ লাখ ৮০ হাজার, মঙ্গলবার ১৭ লাখ ২ হাজার, বুধবার ১৪ লাখ ৮ হাজার এবং বৃহস্পতিবার ১০ লাখ ১৩ হাজারের বেশি শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৪৪ লাখের বেশি। যা সপ্তাহভিত্তিক গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন।
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ হিসাববছরে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।
মেঘনা লাইফ ইন্সরেন্সের শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৩৫ লাখ ২১ হাজার ৯১৩টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০.৪১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮.১০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪১.৪৯ শতাংশ শেয়ার।
গত এক বছরে মেঘনা লাইফের সর্বোচ্চ দর ছিল ৭২ টাকা ৭০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দর ছিল ৪৩ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দর হয়েছে ৬৮ টাকা ৭০ পয়সা।
সন্ধানী লাইফ ইন্সরেন্স: চলতি বছরজুড়েই মেঘনা লাইফের লেনদেন হয়েছে ৩ লাখের নিচে। গত সপ্তাহে কোম্পানির লেনেদেনে হঠাৎ চমক দেখা দেয়। সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ২ লাখ ৯২ হাজার, বুধবার ৩৯ লাখ ২ হাজার এবং বৃহস্পতিবার ২০ লাখ ২৯ হাজারের বেশি শেয়ার। সপ্তাহের তিনদিনে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৬২ লাখের বেশি।
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ হিসাববছরে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।
সন্ধানী লাইফ ইন্সরেন্সের শেয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ৬৩৩টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩১.৫৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮.৩০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫০.১১ শতাংশ শেয়ার।
গত এক বছরে সন্ধানী লাইফের সর্বোচ্চ দর ছিল ৩৯ টাকা ৩০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দর ছিল ১৮ টাকা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দর হয়েছে ৩২ টাকা ১০ পয়সা।