লকডাউনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এরসঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাংক বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে শেয়ারবাজার খোলা রাখার কোন সুযোগ নেই। ফলে লকডাউনে বন্ধের আগে আগামিকালই হতে যাচ্ছে শেষ কার্যদিবস। এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল কি করবেন বিনিয়োগকারীরা, এ নিয়ে অনেকে রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দে।
লকডাউন নিয়ে সাধারন বিনিয়োগকারীরা যতটা আতঙ্কে, ততটা দূর্বল অবস্থানে নেই বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সাধারনরা বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ার ছেড়ে দিতে চাইলেও বড়রা বিবেচনায় নেবে লকডাউনের পরে কি হবে। কারন লনডাউনের পরে শেয়ারবাজার উর্ধ্বমূখী থাকা স্বাভাবিক। যার প্রমাণ গত বছর দেশে করোনার কারনে বন্ধ থাকা শেয়ারবাজার খুলতেই টানা উত্থান হয়েছিল।
দেখা গেছে, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনারোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই বড় পতন হয়। এই বাজার ওই বছরের ২৬ মার্চ বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে। যা মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারকেও পানির দরে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই পানির দরে যারা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তারাই শেয়ারবাজার খোলার পরে মুনাফা করতে পেরেছিলেন। এক্ষেত্রে আফসোস করতে হয়েছে বন্ধের আগে বিক্রি করা বিনিয়োগকারীদেরকে।
অনেকটা সেই আগের পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। আবারও বন্ধ হতে যাচ্ছে শেয়ারবাজার। তার আগে বাকি রয়েছে মঙ্গলবারের (১৩ এপ্রিল) শেষ কার্যদিবস। এদিন বিনিয়োগকারীরা গতবারের মতো পানির দামে শেয়ার বিক্রি করবেন নাকি ধরে রাখবেন, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরকেই নিতে হবে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার খবরে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী হবে। তারা শেয়ার ছেড়ে দিতে চাইবে। তাদের এই দূর্বলতার সুযোগ আরেক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা নেবে। কারন লকডাউনের পরে শেয়ারবাজার যখন খুলবে, তখন বাজার ইতিবাচক হওয়াটা যে স্বাভাবিক, সেটা তারা জানে।
বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, শেয়ারবাজার বন্ধ হয়ে গেলে কিছু বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী হবে। তবে সেটা বিচক্ষন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে না। এছাড়া এমন না যে আগামিকাল বিক্রি করলে মার্জিণ ঋণ শোধ করা যাবে। যাতে করে এখন বিক্রি করে সুদ থেকেও মাফ পাওয়া যাবে না।
তারপরেও আতঙ্কিত হয়ে লেনদেনের শুরুতে কেউ কেউ বিক্রির চাপ বাড়াবে বলে মনে করেন বিএসইসির এই নির্বাহি পরিচালক। তবে বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সে পথে যাবে বলে মনে করেন না তিনি। তারা অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে কম দামে শেয়ার কেনার চেষ্টা করবে। এমনকি যাদের পোর্টফোলিওতে নগদ অর্থ পড়ে রয়েছে, সেখান থেকে একটা অংশ বিনিয়োগে যাবে। যে কারনে লেনদেনের শুরুতে কিছুটা বিক্রির চাপ পড়লেও তা কেটে যাবে।