বর্তমানে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের মাধ্যমে ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এ সুযোগ দেশের যে কোনো অঞ্চলে শিল্পে বিনিয়োগের জন্য সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছে। রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে মঙ্গলবার প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিডা এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে, কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাড়ালে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। পৃথক বৈঠকে আবাসন খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন রিহ্যাব এবং বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন কালো টাকা সাদা করার বর্তমান সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানায়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে একই বৈঠকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরে। এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে বেজার পক্ষ থেকে করপোরেট কর ৩২ দশমিক ৫ থেকে ২২ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর না কাটতে এনবিআরকে অনুরোধ করা হয়। কেননা বিনিয়োগকারীরা তাদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি পাচ্ছেন। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের বিনিয়োগকারীদের জন্য কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর দাবি করে।
কর্মসংস্থান বাড়ালে কর ছাড়ের প্রস্তাব : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়- এমন কোম্পানির করহার এখন ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ। বিল্ড ওই হার ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। একই সঙ্গে যারা বাড়তি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, তাদের জন্য করপোরেট কর আরও এক শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি।
বিল্ডের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান বলেন, কর-জিডিপি কমিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের অনুপাত ৩৫:৬৫, যা কিনা ভোক্তা ও উৎপাদনশীল খাতের স্বার্থ বিবেচনায় উল্টো হওয়া জরুরি।
একক ব্যক্তির কোম্পানির (ওপিসি) জন্য ২৫ শতাংশ হ্রাসকৃত হারে করপোরেট আয়কর হারের প্রস্তাব করেছে বিল্ড। এ ছাড়া করদাতাদের উৎসাহিত করতে সব করদাতার নামে ট্যাক্স কার্ড চালু এবং সব ধরনের রপ্তানিকারককে সহায়তা দিতে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা সবার জন্য একই করার প্রস্তাব করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, করদাতাদের স্বীকৃতি প্রদানে ট্যাক্স কার্ডের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে এনবিআরকে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, কেউ যেন সুবিধার অপব্যবহার না করতে পারে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাবকে ভালো হিসেবে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি অবশ্যই আনুপাতিক হারে হতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সক্ষমতাকে বিবেচনায় নিতে হবে।