1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
এমডি নেই দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর মতো সংস্থার
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২০ এএম

এমডি নেই দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর মতো সংস্থার

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯
dse

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ নির্বাহী কর্মকর্তা তথা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদটি ফাঁকা রয়েছে। এমডি পদে নিয়োগ দিতে এক প্রার্থীকে সুপারিশ করেছিল ডিএসইর পর্ষদ। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তার ব্যাপারে নেতিবাচক হওয়ায় তিনি নিয়োগ পাননি বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

এমনকি বিদায়ী এমডির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবেও আপত্তি তোলে বিএসইসি। এতে গত পাঁচ মাস ধরে এমডি পদটি ফাঁকা রয়েছে ডিএসইর। ফলে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে।

দীর্ঘদিন এমডি না থাকার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, ‘পুঁজিবাজারে সর্বত্রই ঢিলেঢালা অবস্থায় চলছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার কেউ নেই। পরিতাপের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর মতো সংস্থার এমডি নেই গত কয়েক মাস ধরে। পুঁজিবাজার ক্রমেই পরিত্যক্ত (অ্যাবানডেন্ট) বাজারে পরিণত হচ্ছে।’

জানা গেছে, ডিএসইর এমডি পদে সর্বশেষ ছিলেন কেএএম মাজেদুর রহমান। গত ১১ জুলাই তার মেয়াদ শেষ হয়। মাজেদুর রহমানের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাকে দ্বিতীয় দফায় নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিল ডিএসই পর্ষদ। কিন্তু বিএসইসি সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। তারপর থেকেই শূন্য রয়েছে পদটি।

এদিকে এমডি নিয়োগ দিতে দুই দফায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ডিএসই। সর্বশেষ সাতজনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এর মধ্য থেকে তিনজনের নাম প্রস্তাব করে ডিএসই। নিয়ম অনুযায়ী সেই তালিকা জমা দেওয়া হয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, তালিকায় থাকা প্রথম জনকেই নিয়োগ দিতে চেয়েছিল ডিএসই। এজন্য বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিজেদের পছন্দের কথাও জানানো হয় বিভিন্নভাবে। কিন্তু প্রস্তাবিত নামটি পছন্দ হয়নি বিএসইসির। ফলে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়।

ডিএসইর ডিমিউচুয়ালাইজেশন বিধি অনুযায়ী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অবশ্য বিএসইসির অনুমতিতে তা বর্ধিত করা যাবে। সে অনুযায়ী গত মাসের (অক্টোবর) মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দিতে হতো ডিএসইকে। কিন্তু যথাসময়ে এমডি নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি ডিএসইর। সে জন্য বিএসইসি আরও তিন মাস সময় বৃদ্ধি করে দিয়েছে ডিএসইকে এমডি নিয়োগ দিতে। সে অনুযায়ী এমডি নিয়োগে আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পেয়েছে ডিএসই।

জানা গেছে, নতুন করে এমডি নিয়োগ দিতে আগামী সপ্তাহে ফের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেবে ডিএসই পর্ষদ। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত পছন্দসই ব্যক্তিকে এমডি হিসেবে দেখতে চায় বিএসইসির কিছু কর্তা। এ জন্যই ডিএসইর সুপারিশকে গ্রহণ করা হয়নি।

সূত্র জানিয়েছে, ডিএসইর আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারী হয় চীনা কনসোর্টিয়াম। কিন্তু এর বিরুদ্ধে প্রতিবেশী একটি দেশের স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী করতে চেয়েছিল বিএসইসির একটি গ্রুপ। কিন্তু ডিএসই সদস্যদের ভোট, শেয়ারদর বেশি ও শক্তিশালী স্টক এক্সচেঞ্জ হওয়ায় চীনা কনসোর্টিয়ামকে নির্বাচন করা হয়। এ নিয়ে ডিএসইর তৎকালীন এমডিকে অপছন্দ করতে শুরু করেন বিএসইসির কয়েকজন কর্মকর্তা।

স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মেয়াদ তিন বছর। তবে কমিশনের অনুমোদনক্রমে তিনি আরও এক মেয়াদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন। এজন্য তখনকার এমডি মাজেদুর রহমানকে পুনরায় নিয়োগ দিতে চেয়েছিল ডিএসইর পর্ষদ। কিন্তু কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্বাচন ও কয়েকটি কোম্পানির বিষয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইস্যুতে ডিএসইর তৎকালীন এমডির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় বিএসইসির কর্মকর্তাদের। এরই জের হিসেবে তাকে পুনরায় নিয়োগ দিতে সম্মত হয়নি বিএসইসি।

এরপর থেকে ডিএসইর এমডি পদটি ফাঁকা হয়। পদটি পূরণে গত ৭ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ। আবেদনের সময় ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে ১৬ জন আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য কাউকে না পেয়ে দ্বিতীয় দফায় ৮ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয় ডিএসই। গত ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করেন কয়েকজন। তাদের মধ্য থেকে সাতজনকে গত ২ অক্টোবর ডাকা হয় সাক্ষাৎকারের জন্য। এর মধ্য থেকে তিনজনকে প্রাথমিক বাছাই করা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী, এমডি নিয়োগের অনুমোদন নিতে বিএসইসির কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু ডিএসইসির প্রস্তাবনাকে নাকোচ করে দেয় বিএসইসি। পুনরায় নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয় ডিএসইসিকে। সূত্র জানিয়েছে, এমডি নিয়োগ নিয়ে ডিএসই ও বিএসইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই বড় হচ্ছে। বিএসইসি তাদের পছন্দ মতো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে চাইছে। কিন্তু ডিএসইসি চাইছে, করিৎকর্মা কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক। এ নিয়েই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে দুই সংস্থার মধ্যে।

এমডি পদ শূন্য হওয়ার পর থেকে ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আবদুল মতিন পাটোয়ারী ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তের মধ্যে ডিএসইর এমডি হিসেবে প্রার্থীর ব্যবস্থাপনা, পণ্যর উন্নয়ন, অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা, পাবলিক রিলেশন দক্ষতা ও পুঁজিবাজার বিষয়ের জ্ঞানকে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হয়।

শেয়ারবার্তা/ সাইফুল ইসলাম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ