নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথে রয়েছে ছয় বাধা। এ কারণে চেষ্টা সত্ত্বেও নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড় করাতে পারছেন না অনেক নারী। এগিয়ে যাওয়ার পথে চিহ্নিত বাধাগুলো হচ্ছে- ‘বড় অংকের ঋণ না পাওয়া, ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা, পণ্য রপ্তানিতে বাধা, নতুন বাজার সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি, নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের দক্ষতার অভাব এবং পরিবার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে দ্বিমুখী কাজের চাপ।’
এসব তথ্য উঠে এসেছে রোববার শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘মুজিববর্ষে নারী-উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে।
সেমিনারে এ বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ।
প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘দেশে নারী-উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ায় বাড়ছে নারীর কর্মসংস্থান। কারণ নারী নিয়ন্ত্রিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে বেশি নিয়োগ পাচ্ছেন নারীকর্মীরা।’
নারী-উদ্যোক্তাদের নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণার তথ্য তুলে ধরে ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘দেশের প্রায় শতকরা ৫৪ ভাগ নারী শুধু নিজের চেষ্টা ও আগ্রহে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন। তবে নারী-উদ্যোক্তাদের শতকরা ৮১ ভাগেরই ব্যাংক হিসাব না থাকা প্রমাণ করে, তাদের ব্যবসা ব্যবস্থাপনার দক্ষতা উন্নয়নে নজর দেয়া প্রয়োজন।’
তিনি এ সব সংকট সমাধানে ব্যাংকগুলোর এগিয়ে আসা, নারী-উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, এসএমই ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিশেষ ঋণ কর্মসূচি চালু, পণ্যের বাজারজাতকরণে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরিসহ বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং শিল্পসচিব কে এম আলী আজম।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে শতকরা ২৮ ভাগ নারী-উদ্যোক্তাদের সামাজিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হতো। এখন সেই পরিস্থিতি অর্ধেকে নেমে এসেছে। নারী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে করদাতার হারও এই সময়ে ১০ ভাগ থেকে ৫৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি স্নাতক পাস শিক্ষিত নারী-উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে এবং পারিবারিকভাবে নারীদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করার হারও বেড়েছে।’
এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মফিজুর রহমান।
নির্ধারিত বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান।