1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এমডি নিয়োগ নিয়ে অর্ন্তদ্বন্ধ চরমে
মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৭ এএম

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এমডি নিয়োগ নিয়ে অর্ন্তদ্বন্ধ চরমে

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১

পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন অনুযায়ী, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগের ক্ষমতা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) হাতে। যদিও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ৬১৯তম পর্ষদের সুপারিশের ভিত্তিতে সাবেক এমডি মীর ছাইফুল্লাহ-আল-খালেদকে দ্বিতীয় দফায় এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের পর্ষদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের।

এদিকে, মেঘনার সাবেক এমডি মীর ছাইফুল্লাহ-আল-খালেদকে পুনরায় এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ায় এমডির বিরুদ্ধে এরই মধ্যে রুল জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন। এ বিষয়ে উচ্চ আদালত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মেঘনার এমডিকে রিটের জবাব দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের এমডি মীর ছাইফুল্লাহ-আল-খালেদ চাকরি থেকে অবসরে যান ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। তবে অভিজ্ঞতা বিবেচনায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিপিসি তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়, যা চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি শেষ হয়। তবে এ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ১১ জানুয়ারি মেঘনা বোর্ডের ৬১৯তম সভায় তাকে পুনরায় দ্বিতীয় মেয়াদে আরো এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় মেঘনার পরিচালনা পর্ষদ। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিপিসির অগোচরে গত ১৪ জানুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোছামাৎ ফারহানা রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে মেঘনার ৬১৯তম বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাইফুল্লাহ-আল-খালেদকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।

কিন্তু আইন মোতাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা মেঘনা পেট্রোলিয়ামের পরিচালনা পর্ষদের নেই। এ-সংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধানে এমডি নিয়োগের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে একমাত্র বিপিসিকে। মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনেও বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। এর ১৩১(ক) ধারায় বলা আছে, করপোরেশন কর্তৃক কোম্পানির এমডি নিয়োগ করা হবে। তাছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন আইন, ২০১৬-এর ১১(ঢ)তে বিপিসির অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান নির্বাহী নিয়োগের ক্ষেত্রে করপোরেশনকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু মেঘনা পেট্রোলিয়ামের পরিচালনা পর্ষদ। এমনকি মন্ত্রণালয়ও এ আইন-কানুনের কোনো তোয়াক্কা করেনি।

বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ছাইফুল্লাহ-আল-খালেদের সর্বশেষ এ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনুমোদনের সময় বিপিসির সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা করেনি মেঘনা পেট্রোলিয়ামের পর্ষদ। যে কারণে পরিচালনা পর্ষদের এমন অবৈধ কর্মকাণ্ডে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিপিসি। এ-সংক্রান্ত এক চিঠিতে বিপিসি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনুমোদনের ওই অবৈধ সিদ্ধান্ত বাতিল এবং বিধিবিধান অনুসরণের নির্দেশনা দেয় মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে।

এদিকে ২১ জানুয়ারি বিপিসির সচিব মো. লাল হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশের চিঠিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী মীর সাইফুল্লাহ-আল-খালেদকে এক মাসের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্নের আদেশ জারি করা হয়। কিন্তু আদেশের তিনদিন পর ২৪ জানুয়ারি আরেকটি চিঠিতে বিপিসির সচিব মো. লাল হোসেন মেঘনা পেট্রোলিয়ামের সচিবকে দেয়া চিঠিতে এমডি নিয়োগ সুপারিশের ৬১৯তম বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত বাতিলের অনুরোধ জানান।

এদিকে ২১ ও ২৪ জানুয়ারি একই ঘটনায় বিপিসির সচিবের দুই ধরনের চিঠি কেন্দ্র করে মেঘনার এমডি নিয়োগে বিপিসির অবস্থানের সমালোচনা করেছেন কর্মকর্তারা। বিষয়টিকে তারা বিপিসি ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, ২১ জানুয়ারি সচিবের চিঠিতে মেঘনার এমডিকে এক মাসের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বলা হয়। অথচ তিনদিন পর বিপিসির সচিব মেঘনার সচিব বরাবর নতুন করে চিঠি ইস্যু করে মেঘনার এমডি নিয়োগে পর্ষদের দেয়া সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য অনুরোধ জানান। কেন এমনটা করা হলো। বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কি মেঘনার এমডি নিয়োগে মেমোরেন্ডাম অ্যান্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের ১৩১ (ক) ধারার বিষয়টি আগে জানতেন না। নাকি এ নিয়োগে বড় কোনো আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি ছিল, যার কারণে একই ইস্যুতে বিপিসির দুই দফায় ভিন্ন ভিন্ন চিঠি দিলেন। এ ঘটনায় বিপিসি কোনোভাবে নিজেদের দায় এড়াতে পারে না।

আইন লঙ্ঘনজনিত গুরুতর কর্মকাণ্ড ছাড়াও বিপিসি কর্মকর্তারা এটিকে ‘চেইন অব কমান্ডের’ চরম লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন। মেঘনা পেট্রোলিয়ামের বর্তমান এমডি মীর ছাইফুল্লাহ-আল-খালেদকে ২০১৬ সালের জুনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিপিসি ওই সময় তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিলেও এবার মীর ছাইফুল্লাহ-আল-খালেদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে বড় ধরনের অনিয়ম দেখছেন তারা।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ