পুঁজিবাজারের বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিককালে সম্প্রসারণ ও পরিধি বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিদেশিদের বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছে কমিশন। এ লক্ষ্যে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বেশ কিছু কর্মপন্থা তৈরি করা হচ্ছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে পুঁজিবাজারে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে চলতি বছরের ৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি চারদিন ব্যাপী সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে ‘রোড শো’ করেছে বিএসইসি। সেখানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরা হয়। এতে তাদের দেশে বিনিয়োগের আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করে বিএসইসি। এর কারণ হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা জানান, তাদের দেশে বিনিয়োগ করে তারা ১ শতাংশও রিটার্ন পায় না। ফলে তারা অন্য দেশে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহী। তবে শর্ট টার্মে নয়, লংটার্মে বিনিয়োগে আসতে চায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
বর্তমানে বিএসইসি বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য কী কী কর্মপন্থা গ্রহণ করা যায় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে কমিশন। ইতোমধ্যে বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বেশ কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।
বিএসইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যেসব বিদেশি বিনিয়োগকারীর দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ রয়েছে, তাদের সঙ্গে কমিশন আলোচনা করবে। মূলত তাদের বুঝিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এ জন্য বেশ কিছু কর্মপন্থা তৈরির কাজ চলছে। এর মধ্যে বিদেশে আরো একাধিক ‘রোড শো’ করার বিষয়টি গুরত্ব পাবে। যাতে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আরো বিনিয়োগে আকৃষ্ট হয়।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে বিএসইসি। এরই ধরাবাহিকতায় তাদের সঙ্গে আলোচনা করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদিও বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে তাদের সঙ্গে আলোচনার কর্মপন্থা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। তবে এ বিষয়টির ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
এদিকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুবাইতে রোড শো পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা গভর্নমেন্টের বড় বড় প্রজেক্টে এবং একদম স্বল্প সুদে আসতে আগ্রহী। তারা আমাদের পাওয়ার প্লান্ট এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচারে আসতে আগ্রহী। তবে তারা শর্ট টার্মে নয়, লংটার্মে বিনিয়োগে আসতে চায়।’
প্রসঙ্গত, বিএসইসি থেকে আয়োজিত রোড শো এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’। প্রথমবারের মতো রোড শো আয়োজন করেছে বিএসইসি। চার দিনব্যাপী রোড শো’র প্রথম দিন বিদেশিদের নিয়ে ইনভেস্টর সামিট: বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট অনুষ্ঠিত হয়। ওই রোড শো’তে প্রবাসী বিনিয়োগকারী, বিদেশি বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।