পুঁজিবাজারে লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়ানোর পর উল্টো পথে হাঁটা শুরু করেছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতনের দিনে উভয় শেয়ারবাজারেই সূচক আগের দিনের তুলনায় কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে বিনিয়োগারীদের অংশগ্রহণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দরবৃদ্ধির পরও বুধবারে সূচক একটিবারেও জন্য ইতিবাচক হয়নি। উল্টোদিকে নেতিবাচক প্রবণতায় ছিল পুরোটা বাজার।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সারাদিন সূচকের নিম্ন প্রবণতা দিয়ে লেনদেন হলেও শুরুটা মন্দ ছিল না। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি লুব-রেফের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ নজর থাকলেও বে´িমকো, রবি, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, সামিট পাওয়ারের মতো কোম্পানিও লেনদেনে এগিয়ে ছিল। কিন্তু অন্যসব কোম্পানির দরপতনের কারণে উভয় শেয়ারবাজারের সূচক কমতে থাকে। সূচকের এই পতন প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৬৩ পয়েন্টে নেমে গেছে।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি পতন হয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। আগের দিনের তুলনায় এই সূচকটি ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে পতনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৭৩টি। আর ১১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মূল্য সূচকের পতনের সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও আগের দিনের তুলনায় কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৭৯ কোটি ৭৩ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৩ কোটি ৩৮ টাকা। সে হিসেবে লেনেদেন কমেছে ১৬৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
খাতভিত্তিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তির কারণে জ্বালানি ও শক্তি খাতের সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে। সারাদিনে সেখানে মোট ১০৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বিবিধ খাতটি। তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ এবং রসায়ন খাতটি। এই দিনে খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮২ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের প্রায় ৯ শতাংশ।
ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লুব রেফের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ৭৩ কোটি ৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রবি।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৮৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৬টির এবং ৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।