বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে বস্ত্র, কৃষি, রপ্তানি এবং প্রবাসী-আয়ের উপর। রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৮৬ শতাংশ দখল করে আছে বস্ত্র খাত। এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি খাতকেকে বহুমুখী করতে না পারলে অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। তাই পোশাক খাতের উপর নির্ভরতা কমিয়ে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ।
শনিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে, ইজ অব ডুয়িং বিজনেসঃ সামনের দিকে এগুনোর পথ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশ যেমন উত্তরোত্তর প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। পাশাপাশি বৈষম্যও থেকে যাচ্ছে। তার কারণ কি এবিষয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। এ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে ব্যবসায়ীদেরকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ব্যবসার ক্ষেত্রে একই পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্ম সেই ব্যবসায় আগ্রহ হারাচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ঘাটতি, সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে সহযোগিতার অভাব, কাস্টমস নীতিতে অসহযোগিতা এবং স্বল্প খরচে বিনিয়োগের অর্থ না পাওয়ার মতো সমস্যা রয়েই গেছে।
তিনি আরো জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হলে হতে হলে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এরমধ্যে দক্ষ জনবল তৈরি, উদ্যোক্তাদের জন্য সহজে অর্থব্যবস্থাপনা, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সহজিকরণ, কাস্টমসনীতি সহজীকরণ, কম খরচে শিল্পায়নের ব্যবস্থা, গ্যাস কানেকশন এবং উৎপাদিত পণ্য ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছানোর সহজ কৌশলের কোনো বিকল্প নেই।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেন, ব্যবসায়ীদের নানামুখী সমস্যার কথা আমরা জানি। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্যান্য দেশগুলোর সাথে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) করার চেষ্টা করছে সরকার। এছাড়া ব্যবসায়ীক উন্নয়নে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বা বিআইডিএস’এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে অবশ্যই দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু কেন তৈরি হচ্ছে এই অদক্ষ জনবল এবং প্রতিবছর কি কারণে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এখান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর শেষ করে কর্ম বাজারে আসছে। কিন্তু কমিউনিকেশন স্কিল বা যোগাযোগের দক্ষতা একেবারেই নেই। একজন বিদেশির সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে পারেনা। কাজের কোন অভিজ্ঞতা নেই। নতুন করে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের উপযোগী করতে হয়। এ সমস্যার সমাধানে স্কুল পর্যায় থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
শেয়ারবার্তা / আনিস