পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি লাফার্জ-হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড শিল্প কোটায় চুনাপাথর আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
কোম্পানিটির অনৈতিক এই কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সুনামগঞ্জের ছাতকে মঙ্গলবার ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ঘণ্টাব্যাপী এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে অন্তত ৩০টি ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আহমদ শাখাওয়াত সেলিম চৌধুরী।
ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ রাখেন ছাতক পৌর শহরের ব্যবসায়ীরা।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতারা বলেন, সিমেন্ট তৈরি ও করপোরেট ক্রেতাদের কাছে বিক্রির জন্য ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি করে লাফার্জ হোলসিম লিমিটেড। কিন্তু এখন তারা সেই চুনাপাথর খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ড সরকার, জনগণ, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। তারা শিল্প কোটার কর দিয়ে চুনাপাথর এনে ব্যবসায়ী কোটায় খোলাবাজারে বিক্রি করছে।
তারা বলেন, লাফার্জ হোলসিমের এমন কর্মকাণ্ডে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে যুগ যুগ ধরে চুনাপাথর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শত শত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছেন।
লাফার্জ হোলসিম কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে খোলাবাজারে চুনাপাথর বিক্রি বন্ধ না করলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতারা।
অন্যদিকে, এক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছে লাফার্জ-হোলসিম বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটির এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনসের ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের প্রয়োজনীয় সকল সংস্থার অনুমতি নিয়েই ক্লিয়ার সাইজ অ্যাগ্রিগেটস ব্যবসা পরিচালনা করছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। স্থানীয় ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ লাফার্জ-হোলসিম বাংলাদেশ এর অ্যাগ্রিগেটস ব্যবসাকে অবৈধ বলে যে তথ্য ছড়াচ্ছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
রাজস্ব ফাঁকির যে অভিযোগস্থানীয় ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ করেছেন তারও কোন ভিত্তি নেই, বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী সকল ধরনের রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে আসছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রনোদিত তথ্য প্রচারের তীব্র বিরোধিতা করছে লাফার্জ-হোলসিম বাংলাদেশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭ কোটি টনের মতো অ্যাগ্রিগেটস এর চাহিদা রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১.৫ কোটি টন ক্লিয়ার সাইজ অ্যাগ্রিগেটস। এই ১.৫ কোটি টনের শতভাগ চাহিদা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ যে ধরনের ক্লিয়ার সাইজ অ্যাগ্রিটেস উৎপাদন করছে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যে ধরনের অ্যাগ্রিগেটস ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত উভয় পণ্যের গুণগত মান ও ক্রেতা আলাদা। স্থানীয়ভাবে ক্লিয়ার সাইজ অ্যাগ্রিগেটস উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় সম্ভব হবে। আইন মান্যকারী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে লাফার্জ-হোলসিম মনে করে ব্যবসা করার অধিকার সকলেরই রয়েছে এবং সকল পক্ষকেই এই অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।