1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
জেমিনি সি ফুডের বিনিয়োগকারীদের পকেট ফাঁকা
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ এএম

জেমিনি সি ফুডের বিনিয়োগকারীদের পকেট ফাঁকা

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৮ মার্চ, ২০২১

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শতভাগের বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণার পর উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে যেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা পকেট ফাঁকা হয়েছে, তার একটি জেমিনি সি ফুড।

১৯৮৫ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দুই বছরের মধ্যে শেয়ার সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন গুণ। এত বেশি হারে বোনাস শেয়ার ঘোষণার কারণ হিসেবে ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা জানায় তারা। কিন্তু ব্যবসা বাড়েনি, উলটো সংকুচিত হয়েছে, আর লোকসানে ডুবতে থাকা কোম্পানিটি এখন ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।

কোম্পানিটি প্রথম যে বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বোনাস শেয়ার দেয়, সেই ২০১৬-২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল প্রায় ২১ টাকা। ওই বছর তারা প্রতি দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি করে বোনাস শেয়ার দেয়।

পরের বছর শেয়ারপ্রতি আয় ৩৫ শতাংশের বেশি কমে ১৩ টাকা ৬ পয়সা হলেও বোনাসের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় কোম্পানিটি। সেই বছর ১২৫ শতাংশ অর্থাৎ চারটি শেয়ারের বিপরীতে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দেয় তারা। অর্থাৎ, যার ২০০টি শেয়ার ছিল, দুই বছরের মধ্যে তার শেয়ারসংখ্যা বেড়ে ৬৭৫টি হয়ে যায়।

পরের দুই বছরও যথাক্রমে ১৫ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয় কোম্পানিটি। আর যারা আরও দুই বছর শেয়ার ধরে রেখেছেন, তাদের শেয়ারসংখ্যা বেড়ে হয় ৮৫৩টি।

চার গুণেরও বেশি শেয়ার বেড়ে যাওয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি তো নেই-ই, উলটো কখনও পুঁজি ফিরে পাওয়া যাবে কি না, এই নিয়েই দুশ্চিন্তা চলতে হচ্ছে তাদের।

লোকসানের জন্য কোম্পানিটি ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। ফলে শেয়ার দর নেমে গেছে তলানিতে।

২০১৭ সালে যারা ১ হাজার ২২৫ টাকায় শেয়ার কিনেছেন, পরের তিন বছর বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর দাম পড়েছে ২৮৬ টাকা ৯০ পয়সা। এখন কোম্পানির শেয়ারের দাম ১৪৪ টাকার ঘরে।

লোকসানি এই কোম্পানিটির শেয়ারমূল্যও ধরে রাখা হয়েছে কৃত্রিমভাবে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে এর নিচে নামতে পারছে না, তবে এই দামে শেয়ার কেনার মানুষ নেই বললেই চলে।

গত ১৮ জানুয়ারির পর এক দিনই বলার মতো লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটির। কোনো কোনো দিন কোনো শেয়ারই হাতবদল হয় না।

স্বল্প মুলধনি কোম্পানিগুলোর মাত্রাতিরিক্ত বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে শেয়ারসংখ্যা বাড়ানোর পেছনে মালিকপক্ষের অন্য উদ্দেশ্য থাকে বলে অভিযোগ আছে।

বেশি বোনাস দেয়ার খবর ছড়িয়ে শেয়ারের দাম বাড়নো হয়। কারণ, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেশি শেয়ার মানেই বেশি মুনাফা, এই ধরনের একটা ধারণা আছে। আর দাম যখন ওপরে উঠে, তখন উদ্যোক্তা পরিচালকরা ঘোষণা দিয়ে বা না দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেন।

ফ্যামিলিটেক্সের ক্ষেত্রে ঘোষণা না দিয়ে শেয়ার বেচে দেয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি।

গত এক দশকে যেসব কোম্পানি মাত্রাতিরিক্ত বোনাস শেয়ার দিয়ে পরিশোধিত মূলধন হঠাৎ করে বাড়িয়েছে, তার সিংহভাগের পরিণতিই জেমিনি সি ফুডের মতোই।

স্টাইলক্রাফট তিন বছরের ব্যবধানে শেয়ারসংখ্যা ২৩ গুণ করার পর ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা বলে ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে যথাক্রমে ৮০, ৪১০ ও ১৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয় কোম্পানিটি। কিন্তু কোম্পানির আয় কমতে কমতে এখন লোকসানিতে পরিণত হয়েছে স্টাইলক্রাফট।

একই অবস্থা মুন্নু অ্যাগ্রোর। কোম্পানির নাম আগে ছিল মুন্নু স্টাফলার। পরিশোধিত মূলধন প্রায় ছয় গুণ বাড়িয়ে কোম্পানির নাম ও ব্যবসা পাল্টে মুন্নু অ্যাগ্রো হওয়ার পর কোম্পানির আয় কমেছে। সেখানেও উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে লোকসান হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।

২০২১ সালে ডেলটা লাইফ একটির বিপরীতে ২১টি বোনাস শেয়ার দেয়াকে কেন্দ্র করে শেয়ার দর বেড়ে আকাশচুম্বী হয়ে যাওয়ার পর তাতে বিনিয়োগকারীরা টাকা হারিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন।

২০১৩ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়ে হুলুস্থুল ফেলা ফ্যামিলিটেক্সের শেয়ার দর ২০২০ সালে এক পর্যায়ে ১ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ