পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ড লভ্যাংশ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রতারণ করেছে বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করছেন। ফান্ডটির লভ্যাংশের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দাবি করেছেন তারা।
বিনিয়োগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, ফান্ডটি তাদের প্রসপেক্টাসে আয়ের ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে প্রদানের কথা বলেছে। অথচ বিনিয়োগকারীদের টাকায় ফান্ডটি ১ টাকা ৬৮ পয়সা ব্যবসা করে তাদেরকে মাত্র ১৬ পয়সা লভ্যাংশ হিসাবে দিয়েছে। যা আইনের সরাসরি লংঘন বলে তারা দাবি করছেন।
৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরের ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি আয় (ইপিইউ) করেছে ১ টাকা ৬৮ পয়সা, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমন অবস্থায় ফান্ডটি থেকে ভালো লভ্যাংশ পাওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে তারা বলছেন এ আয় তাদের প্রভিশন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। যা এখনও আনরিয়ালাইজ গেইন হিসেবে রয়েছে।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে জানানো হয়ে, ফান্ডটি ২০২০ সালে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৬৮ পয়সা। এর বিপরীতে ১ দশমিক ৬০ শতাংশ বা ইউনিটপ্রতি ১৬ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। যেখানে নিয়মানুযায়ী ফান্ডটির আয়ের ৭০ শতাংশ বা ১ টাকা ১৭ পয়সা লভ্যাংশ আকারে দেয়ার কথা।
ফান্ডটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রিভাইস প্রভিশনের কারণে তাদের আয় বেশি হয়েছে এবং তা ফান্ড বিক্রি থেকে অর্জিত মুনাফা নয়। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ফান্ডটির বাজার মূলধন অনুযায়ী ইউনিটপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিইউ) দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ১৬ পয়সা।
ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি লোকসান ছিল ১৮ পয়সা। সে বছর ফান্ডটি কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। ২০১৯ সালেও একইভাবে ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা লোকসান করেছিল, সে বছরও কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি। সর্বশেষ ২০২০ সালে ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৬৮ পয়সা মুনাফা করলেও লভ্যাংশ দিয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৬০ শতাংশ বা ১৬ পয়সা।
ফান্ডটি যখন গত দুই বছর লোকসান করেছিল তখন তারা কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এখন যখন তাদের লাভ হয়েছে তখন তারা তা আগের লস সমন্বয় করে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা কম দিয়েছে। এটা যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা।
ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ডের হ্যাড অব পোর্টফোলিও ইয়াসিন মো. ফজলুল আমীন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘যে লভ্যাংশটি ঘোষণা করা হয়েছে সেটি আমাদের অর্থবছরের হিসেবে নয়। প্রভিশন থেকে দেয়া হয়েছে। আগের বছর আমাদের যে লস ছিল সেটি এখন ইউনিটের দর বাড়ায় অনেকটা লোকসান কমেছে। এ ছাড়া এটি আমাদের আন রিয়ালাইজ গেইন। অবশ্য ইউনিট বিক্রি করে রিয়ালাইজ গেইন করলেই আয় বেশি হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার বিষয়টি আইনে আছে। আমরা সেটিকে অনুসরণ করি। কিন্তু এ নিয়মে যে বছরের আয় সে বছরে হিসেবে দিতে হয়। কিন্তু আমরা যে লভ্যাংশ দিয়েছি সেটি শুধু এক বছরের হিসেবে নির্ধারণ হয়নি। আগের বছরের লসের সঙ্গে সমন্বয় করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে।’