পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ লিমিটেড (বিএটিবিসি) ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ২০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরফলে কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, এর ফ্লোর প্রাইস কতো হবে?
বুধবার (৩ মার্চ) রেকর্ড ডেটের দিন কোম্পানিটির যে দাম রয়েছে, তার সঙ্গেই সমন্বয় হবে লভ্যাংশ। তবে নগদে যে লভ্যাংশ দেয়া হয়েছে হয়েছে, সেটি শেয়ার দামের সঙ্গে সমন্বয় হবে না। সেই হিসাবে শেয়ারটির নতুন ফ্লোর প্রাইস হবে ৫১৮ টাকা। অর্থাৎ এই দামের নিচে শেয়ারটি বিক্রি হবে না।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শেয়ারের দাম ক্রমাগত পড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দেয়া হয়, যা পরিচিতি পায় ফ্লোর প্রাইস হিসেবে। সে সময় বিএটিবিসির ফ্লোর প্রাইস ঠিক হয় ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস ঠিক হওয়ার পর মুন্নু অ্যাগ্রো ১০ শতাংশ বোনাস এবং ন্যাশনাল পলিমার ১০০ শতাংশ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার পরও ফ্লোর প্রাইস পাল্টায়নি। তবে বিএটিবিসি একটি শেয়ারের বিপরীতে দুটি বোনাস শেয়ার দেয়ার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস সমন্বয়ের ঘোষণা দেয়। সিদ্ধান্ত হয়, বোনাস ও রাইটের সঙ্গে আনুপাতিক হারে কমবে ফ্লোর প্রাইস।
তখন কথা উঠে বিএটিবিসির নতুন ফ্লোর প্রাইস আগের তিন ভাগের এক ভাগ হয় কি না। তবে রেকর্ড ডেটের দুই দিন আগে বিএসইসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় রেকর্ড ডেটের দামের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে নতুন ফ্লোর প্রাইস। শেয়ারটি রেকর্ড ডেটের আগে ক্লোজ হয় এক হাজার ৫৫৪ টাকা। সেই হিসাবে এর ফ্লোর প্রাইস হবে ৫১৮ টাকা।
বিএটিবিসি ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এরপর সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে চারটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার বোনাস ঘোষণা করে। তারপর ১৯৮৭ সালে দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি, ১৯৯৩ সালে তিনটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার ঘোষণা করা হয়। এর ২৫ বছর পর ২০১৮ সালেও কোম্পানিটি ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর আগ পর্যন্ত কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৬০ কোটি টাকা। লভ্যাংশ ঘোষণার পর মূলধন দাঁড়ায় ১৮০ কোটি টাকা।
সর্বশেষ অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ অনুমোদন হলে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি টাকা। আগামী ২৮ মার্চ কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা হবে। সেদিন অনুমোদন হলেই এই লভ্যাংশ চূড়ান্ত হবে। বাংলাদেশে বার্ষিক সাধারণ সভায় বোর্ড প্রস্তাবিত লভ্যাংশ পরিবর্তনের ইতিহাস খুবই কম।