ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লভ্যাংশের সিদ্ধান্ত কি পরিবর্তন হবে? এই প্রশ্ন এখন লাখ লাখ বিনিয়োগকারীদের মুখে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের লভ্যাংশ ইস্যুতে এক সিদ্ধান্তেই এই দুই খাতে নেতিবাচক প্রভাব শুরু হয়। গতকাল খাত দুটিতে লভ্যাংশের সীমা বেঁধে দেয়া আদেশ পরিবর্তনের খবর আসলে খাত দুটির শেয়ার আবার চাঙ্গা হয়ে উঠে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি পর্যালোচনার কথা জানালেও এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর ফলে আজ (বুধবার) ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চিত্র আগের অবস্থানে ফিরে যায়।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রস্তাব যাওয়ার খবরে মঙ্গলবার উত্থান হলেও সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকায় বুধবার নেমে আসে আবারও স্থবিরতা। অন্যদিকে লোকসানি ও বন্ধ একের পর এক প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ পুনর্গঠন করে চলেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এই খবরে এখন লোকসানি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তুঙ্গে। প্রায় প্রতিদিনই এক দিনে সর্বোচ্চ পরিমাণ বাড়ছে বেশ কিছু লোকসানি প্রতিষ্ঠানের দর। আগামীতে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলো চালু হলে ভালো লভ্যাংশ দেবে এমন গুজবে দাম বাড়িয়ে হলেও শেয়ার কিনছেন বিনিয়োগকারীরা।
দুর্বল কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন কম হওয়ায় সেগুলোর দর বৃদ্ধিতেও সূচকে প্রভাব পড়ে কম। কিন্তু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দর কমলে সূচকে বেশ প্রভাব পড়ে। এই পরিস্থিতিতে ১৩১টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি আর এর চেয়ে কমসংখ্যক ১২৬টির দর পতনের পরও আজ (বুধবার) সূচক পড়ে গেছে পুঁজিবাজারে। গতকাল (মঙ্গলবার) আদেশ পাল্টানোর খবর ছাউর হলেও আজ আদেশ বহাল রাখার গুঞ্জনই বেশি রটে।
এদিকে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লভ্যাংশের সীমা বেঁধে দেয়া আদেশ পাল্টাতে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ ঘোষণায় এই বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার চায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই বিষয়ে এখনও বিষয়টিতে নড়েচড়ে বসেনি।
হেলাল হোসেন নামে এক প্রবীণ বিনিয়োগকারী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সহজে তাদের আদেশ পাল্টাতে চাইবে না। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ দরকার। কিন্তু সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে তিনি মনে করেন না।
মনিরুজ্জামান নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক লভ্যাংশ ঘোষণায় বিধি-নিষেধ আরোপ করার পর বিএসইসি থেকে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। যেহেতু বিএসইসি এই বিষয়ে নিশ্চুপ রয়েছে, সেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক আরও শক্ত হয়ে বসেছে।