পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে বিদেশি ও স্পন্সর-ডিরেক্টদের মালিকানার অনুপাত বাড়লে, প্রকৃত মুনাফা গোপনের প্রবণতা হ্রাস পায়। অপরদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা বাড়লে প্রকৃত মুনাফা গোপনের প্রবণতা বাড়ে। এমনটি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিআইসিএমের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত ‘বিআইসিএম রিসার্চ সেমিনার ২’- এ প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইসিএমের অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র দেবনাথ। প্রবন্ধটির শিরোনাম ‘ওর্নারশিপ স্ট্রাকচার অ্যান্ড রিয়েল আর্নিংস ম্যানেজমেন্ট: এন ইসপিরিক্যাল স্টাডি অন ইমার্জিং ইকোনমি।’
সেমিনারে ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ আবু ইউছুফ। এছাড়া বিআইসিএমের ডিরেক্টর ওয়াজিদ হাসান শাহ সেমিনারে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন।
সেমিনারে উত্থাপিত গবেষণায় বলা হয়- বাংলাদেশে পুঁজিবাজারের কোম্পানিসমূহে বিদেশি ও স্পন্সর-ডিরেক্টর মালিকানার অনুপাত বাড়লে প্রকৃত মুনাফা গোপনের প্রবণতা হ্রাস পায়। অন্যদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা বাড়লে প্রকৃত মুনাফা গোপনের প্রবণতা বাড়ে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বল্প মেয়াদে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করেন। ফলে, দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করার চেয়ে, স্বল্পমেয়াদে লেনদেনের মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে উচ্চ মুনাফা অর্জন তাদের মূল উদ্দেশ্যে পরিণত হয়।
গবেষণার আরো দেখা যায় যে, বাংলাদেশে করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড প্রকৃত মুনাফা ব্যবস্থাপনা সীমাবদ্ধ করতে উপকারী ভূমিকা পালন করতে পারেনি।
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের সঙ্গে একমত পোষণ করে ড. স্বপন কুমার বালা বলেন, প্রকৃত মুনাফা ব্যবস্থাপনা মানেই সব সময় খারাপ নয় বরং তার দীর্ঘমেয়াদের প্রভাব কেমন তার ওপর ভিত্তি করে আমাদের মন্তব্য করা উচিত।
যুগ্মসচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ বলেন, পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে নতুন যেসব আইন বা নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে তার প্রভাব কেমন সেটাও আমাদের বিবেচনায় আনা দরকার।
এছাড়াও, ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, বাংলাদেশের এই এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার প্রাক্কালে গুড গভর্ন্যান্স খুবই জরুরি এবং আর্থিক তথ্যের সঠিক বিবরণী এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিআইসিএমের অনুষদ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।