আর্থিক খাতের ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না বলে নতুন বিধান যুক্ত করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধিত খসড়া তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
আগের খসড়ায় ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ব্যক্তিদের শুধুমাত্র বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা ছিল।
এছাড়া ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা খেলাপি ঋণ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কোন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না বলেও নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
তবে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বাড়ি, গাড়ি, কোম্পানি নিবন্ধন এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়া ও কোন সংগঠনে পদ না পাওয়ার নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব বহাল রয়েছে।
সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি ওই তালিকা চূড়ান্ত করার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
তবে বিদ্যমান আইনের ১৭ ধারায় কোন পরিবর্তন না আনায় সংশোধিত খসড়া আইনে রূপান্তরিত হলে ব্যাংক পরিচালকদের ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না।
১৭ ধারায় বলা আছে, কোন ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করলে ঋণদাতা ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতা পরিচালককে নোটিশ দেবে। ওই নোটিশ দেওয়ার দু’মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে ঋণগ্রহীতা পরিচালক খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে এক বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারায় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যে পদ্ধতি রয়েছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে নোটিশ জারি করে পরিচালক পদ থেকে অপসারণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যার প্রয়োগ হয় না বললেই চলে। এরূপ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিআইবিতে তার নাম চিহ্নিত করার ব্যবস্থা থাকা দরকার’।
বর্তমানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবারের চারজন একসঙ্গে পরিচালক হতে পারেন। তবে ব্যাংক কোম্পানি আইনে পরিবারের আওতা ছোট হওয়ায় এক পরিবার থেকে অধিক সংখ্যক পরিচালক হতে পারছেন। এজন্য প্রথম খসড়ায় পরিবারের সংজ্ঞায় স্বামী, স্ত্রী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের কথা আছে।