বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে বহুজাতিক কোম্পানিতে তাদের শেয়ার ধারণের পরিমাণ কমছে। বিদেশিদের এভাবে পুঁজিবাজার থেকে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বাজারের জন্য শুভ সংকেত নয় বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে গত বছর ডিসেম্বরের পর ৯টি প্রতিষ্ঠানে বিদেশিদের শেয়ার ধারণের পরিমাণ কমেছে। এগুলো হলো-গ্রামীণফোন, বার্জার পেইন্টস, রেনাটা, ম্যারিকো, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, সিঙ্গার বিডি, লাফার্জহোলসিম, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং হাইডেলবার্গ সিমেন্ট।
গ্রামীণফোন: গত ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণফোনে বিদেশিদের শেয়ার ধারণের ছিল তিন দশমিক ৩৮ শতাংশ। বর্তমানে এ কোম্পানিটিতে তাদের শেয়ার ধারণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক ৩৬ শতাংশ। একই সময়ে ম্যারিকো বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল চার দশমিক ৫৭ শতাংশ। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক ৯৫ শতাংশে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো: গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে বিদেশিদের কাছে কোম্পানির ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার। এখন তা কমে ১১ দশমিক ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। একইভাবে সিঙ্গার বিডিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ছয় দশমিক ৮১ শতাংশ। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক ৬৯ শতাংশ। কমে গেছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং লাফার্জহালসিমের শেয়ার ধারণের পরিমাণ।
লাফার্জহোল সিমেন্ট: গত বছর শেষে লাফার্জহোলসিমেন্টে বিদেশিদের বিনিয়োগ ছিল শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ। বর্তমানে তাদের শেয়ার ধারণের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ।
হাইডেলবার্গ সিমেন্ট: হাইডেলবার্গ সিমেন্টে বিদেশিদের বিনিয়োগ শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বার্জার পেইন্টস: বার্জার পেইন্টসে বিদেশিদের বিনিয়োগ শূন্য দশমিক ৭৫ থেকে শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তবে বাটা সুতে বিদেশিদের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে। ৩১ ডিসেম্বর শেষে এ কোম্পানিতে বিদেশিদের শেয়ার ধারণের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৪১। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫।
এদিকে বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে লিন্ডে বিডি এবং রবিতে বিদেশিদের কোনো শেয়ার নেই।
এদিকে সম্প্রতি বাজারে নতুন আসা বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেয়ায় বিদেশিদের বিনিয়োগ আরও কমতে পারে বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত, বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে সবারই প্রত্যাশা বেশি থাকে। যে কারণে রবি ভালো লভ্যাংশ দেবে এমনটি ভেবেছিলেন সবাই কিন্তু তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
প্রসঙ্গত, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রবি আজিয়াটা সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ-সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৩৩ পয়সা। আগের বছর ইপিএস হয়েছিল চার পয়সা। আর গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ১৩ টাকা ৯০ পয়সা।