1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
খেলাপি ঋণ কমেছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ পিএম

খেলাপি ঋণ কমেছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৫৯৭ কোটি ২৬ হাজার টাকা কমে ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশেষ সুবিধা এবং ছাড় দেয়ার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ককর্মকর্তারা জানান, ২০২০ শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি ৫৩ লাখ। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। কিন্তু তিন মাস আগেও খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ডিসেম্বর শেষে ২ লাখ ২ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে সরকারি ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৪২ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ হওয়া ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ৬৬ হাজা ৯৭১ কোটি। আর তাদের খেলাপি ঋণ ৪০ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে ৫৮ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা বিতরণ করেছে বাংলাদেশে কার্যরত বিদেশি ব্যাংক। তবে খেলাপি হয়েছে ২ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। ৩০ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে বিশেষায়িত তিনটি ব্যাংক। অপরদিকে তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ গিয়ে পৌঁছেছে ৪ হাজার ৬১ কোটি টাকায়।

গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো কিস্তি পরিশোধ না করলেও গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন না। এ সময়ের মধ্যে ঋণ/বিনিয়োগের ওপর কোনোরকম দণ্ড, সুদ বা অতিরিক্ত ফি (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আরোপ করা যাবে না।

২০১৯ সালের ১৬ মে ঋণখেলাপিদের মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয় সরকার। সরকারের দেয়া ‘বিশেষ’ ওই সুবিধার আওতায় বহু খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলো নবায়ন করে, যার অর্ধেকই করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো।

এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়েও গত বছর বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে, যার পরিমাণ ৭৫ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ অবলোপন (রাইট অফ) করেছে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ এর মাধ্যমে খেলাপি ঋণের হিসাব থেকে এই অর্থ বাদ যাবে, যদিও তা সহসাই ফেরত আসছে না ব্যাংকগুলোর কাছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন ঋণগ্রহীতা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে রেখেছেন। ফলে ঋণখেলাপি হিসেবে তাদের নাম বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোতে (সিআইবি) উল্লেখ করা হচ্ছে না। এ রকম ঋণের পরিমাণ এখন ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি, কিন্তু এটাও অনেক। কমে আসাটা ইতিবাচক। হয়তো নতুন ঋণে শর্ত যোগ হওয়ায় বড় খেলাপিরা কমিয়ে দিচ্ছে নতুনটি পাওয়ার আশায়। আবার ব্যাংকারদের কড়াকড়ি আরোপও কমে আসার আরেকটি কারণ হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর বলেন, ‘এখন খেলাপিদের অনেকেই ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নতুন করে প্রণোদনার ঋণ নিতে চাচ্ছেন। ফলে ডাউন পেমেন্ট হিসেবে কিছু টাকা আদায় হয়েছে, এটা খুব বেশি বলা যাবে না। তাছাড়া চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ আদায়ে শিথিলতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সময় শেষে মোট খেলাপি কমলেও আগামী বছর বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।’

করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধের সময় আরও বাড়ানোর অনুরোধ করেছে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো ডাউনপেমেন্ট না দিয়ে চলমান সব ঋণ তিন বছর মেয়াদে পুনঃতফসিলের সুযোগ চান তারা। এছাড়া বিদ্যমান মেয়াদি ঋণ পরিশোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাড়তি যে দুই বছর সময় দিয়েছে, তা তিন বছর করার দাবি করা হয়েছে। এসব দাবি মেনে নিলে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের আসল চিত্র আড়ালেই থেকে যাবে বলেও মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সাবেক গভর্নর।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ