বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবিসহ নানা অনিয়মের যেসব অভিযোগ তুলেছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, সেগুলোকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তিনি।
আজ সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমের পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলন করে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ করেছিল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ড. মোশারফের ঘুষ চাওয়ার অডিও রেকর্ড তাদের কাছে আছে এবং তা দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। ডেল্টা লাইফের সাবেক কর্মকর্তা ড. মোশাররফ আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে নানাভাবে কোম্পানিটিকে হয়রানি করছেন।
ড. মোশাররফ হোসেন সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর কাছে কোন ধরণের অনৈতিক সুবিধা বা ঘুষ দাবি করি নাই। বরং ডেল্টা লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান তার প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল (যার সাথে আমার ২৩ বছরের সম্পর্ক) এর মাধ্যমে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা গিফট্ পাঠিয়েছিল। তা তিন (০৩) বার আমি প্রত্যাখ্যান করায় তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে আমাকে হেনস্তা করার উদ্দেশ্যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। পরবর্তীকে আউয়ালকে ডেকে গিফট না নেয়ার কারণে আমার উপর যেন মঞ্জুরুর রহমান মনে কষ্ট না পান তার জন্য অনুরোধ করি। তিনি (মঞ্জুরুর রহমান) চাইলে উক্ত টাকা কোথাও ডোনেট করে দিতে পারেন। পাশাপাশি আউয়ালকে আমি অনুরোধ করি যারা অভিযোগ করেছে, যাদের দীর্ঘ দিনের পাওনা রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষের আইনি কাজে সংযুক্ত (এডেড পার্টি) রয়েছে তাদের পাওনা মিটিয়ে দেয়ার জন্য। সেটি সে পরের দিন আমার সাথে দেখা করে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে গোপনে কথা রেকর্ড করে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ডেল্টা লাইফের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থা গত ২ বছর যাবৎ নিরীক্ষা পরিচালনা করে। নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে নানা ধরণের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হলে তারা নানাভাবে আইনের অপব্যাখ্যা করে উল্টো কর্তৃপক্ষকে হয়রানির চেষ্টা করছে। মূলত তাদের নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে আমার তথা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা চাওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে।
আমি ইতোমধ্যে এবিষয়ে আদলতের শরনাপন্ন হয়েছি। বিষটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার আগেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে তারা সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু তদন্ত বাধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে নিজেদের অনিয়ম ও দুর্নীতিকে আড়াল করার চেষ্টা করছে যা নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্যকে প্রতিষ্ঠিত করার অপকৌশল মাত্র। আদালতের তদন্তাধীন ও বিচারাধীন কোন বিষয়ে এ ভাবে পাবলিকলি প্রেস কনফারেন্স করা উদ্দেশ্যমূলক।
এটা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুষ্ঠুভাবে কাজ করার জন্য বড় ধরণের হুমকী। পাশাপাশি শিষ্টাচার বর্হির্ভুত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা ও বটে।