পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ সরকারি কোম্পানির ব্যবসা নিয়ে শঙ্কিত নিরীক্ষকরা। তারা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ হুমকিতে পড়েছে বলে মনে করছে।
কোম্পানিগুলো হচ্ছে- জিলবাংলা সুগার মিল, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর এবং শ্যামপুর সুগার মিল লিমিটেড।
জিলবাংলা সুগার মিল: জিলবাংলা সুগার মিল নিয়ে নিরীক্ষক বলছে, কোম্পানির শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য এবং রিটেইন আর্নিংস নেতিবাচক। এখানে নিরীক্ষকের বক্তব্য হলো কোম্পানিটি দীর্ঘদিন মুনাফা করতে পারেনি। এতে কোম্পানিটি সরকারের সাহায্য ছাড়া চলতে পারছে না। বিগত বছরগুলোতে কোম্পানির কোনো পরিচালন আয় নেই। এ অবস্থায় কোম্পানির অবস্থা হুমকির মুখে। কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটি তার বিলম্বিত কর হিসাব করেনি। এখন কোম্পানিটি তার আর্থিক প্রতিবেদন যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারছে না।
কোম্পানিটির ট্রেড ডেপ্টরস (পরিশোধ হয়নি এমন চালান) এর পরিমাণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৫৫ হাজার ৭২২ টাকা। তবে ২০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে ট্রেড ডেপ্টরস ২ কোটি ৭৩ লাখ ৪২০ টাকা পেয়েছে অডিটর। এদিকে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে ৫৩ লাখ টাকার তথ্য ভুল হিসাবে দেখানো হয়। গত ৩০ জুন পর্যন্ত অগ্রিম আয়কর এর পরিমাণ ছিল ৯৭ লাখ ৮১ হাজার টাকা। যা এর আগের বছর একই সময়ে একই তথ্য প্রদান করেছে। সার্বিক দিক দিয়ে কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ ভালো নয় বলে মনে করছে নিরীক্ষক।
রেনউইক যজ্ঞেশ্বর: রেনউইক যজ্ঞেশ্বর কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকলেও লভ্যাংশ প্রদান না করায় তা নষ্ট হয়েছে। এদিকে কোম্পানিটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে স্বীকৃত বাকি রয়েছে ৪৯ কোটি ৯২ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৩ টাকা। এর মধ্যে পঞ্চগড় সুগার মিলে ২ কোটি ১৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, ঠাকুরগাঁও সুগার মিলে ৩ কোটি ২১ রাখ ৮৬ হাজার টাকা, সেতাবগঞ্জ সুগার মিলে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা যা বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্র্রিজ করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) আওতায়। তবে অডিটর দেখেছে এসব হিসাব অমিমাংশিত রয়ে গেছে। যার যথাযথ তথ্যাদি খুঁজে পায়নি অডিটর।
কোম্পানিটি গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৮৪ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৫ টাকা। তবে পুঞ্জিভূত লোকসান বেড়েছে ৫ কোটি ৯৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। অডিটর কোম্পানির এ অবস্থাকে ভবিষ্যৎ হুমকি হিসেবে দেখছে।
শ্যামপুর সুগার মিল: শ্যামপুর সুগার মিল কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে রয়েছে। কোম্পানিটির নেট ক্যাপিটাল ঘাটতি রয়েছে ৪৩৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটি প্রতি টন চিনি বিক্রি করে ৫১ হাজার ৪২০ টাকায়; যার উৎপাদন খরচ হয় ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা। তাতে প্রতি টনে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৭৯ টাকা নেট লোকসান করে কোম্পানিটি।
কোম্পানিটি বিক্রয় ছাড় হিসেবে ১ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা মেনে নিয়েছে, যা সমন্বয় করা হয়েছে বিএফ দায় এবং ওয়েলফেয়ার তহবিল দায় থেকে। যা কোম্পানির ভবিষ্যৎ ভালো নয় বলে মনে করছে কোম্পানিটি।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল ইসলাম