বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু পদক্ষেপ এবং ব্যাংক আমানতের সুদের হার কমার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সেকেন্ডারি বন্ডের বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে বাজারে বন্ডের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। সে সময়ে লেনদেনের পরিমাণ ১৫৭ শতাংশ বেড়ে ২৯ হাজার ১৮৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
জুলাইয়ের পর থেকে সরকারী সিকিওরিটির ব্যবসায়গুলো ট্রেজারি বন্ডের (টি-বন্ড) তুলনায় ব্যাংকগুলোতে রাখা আমানতের উপর কম সুদ পায়।তাই তারা সেকেন্ডারি বন্ডে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখায়।
বেসরকারী এবং সরকারি উভয় খাতে ঋণের চাহিদা বিবেচনা করে ব্যাংকগুলি এখন অতিরিক্ত তারল্যের মুখোমুখি হচ্ছে।গত ডিসেম্বরে দেখা যায় ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্য ৯৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে বেঞ্চমার্ক ট্রেজারি বন্ড নির্বাচন করা সহ অন্যান্য পদক্ষেপগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটকে চাঙ্গা করে তুলেছে। বেঞ্চমার্ক বন্ডগুলো ঋণদাতাদের সিকিওরিটির সুদের হার নির্ধারণে সহায়তা করে। ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্য সেকেন্ডারি মার্কেটে উচ্চতর ব্যবসায়ের কারণ।
আইডিএলসি ফিনান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান বলেন, উদ্বৃত্ত তহবিল বিনিয়োগের জন্য অনেক ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন সেকেন্ডারি মার্কেটকে বেচে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কম চাহিদাসম্পন্ন ঋণদাতাকে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করছে। ঋণদানকারীরা করোনাভাইরাস মহামারি থেকে প্রাপ্ত ব্যবসায়িক মন্দার কারণে লাভ করতে উইন্ডোটির দিকে ঝুঁকছেন।
কর্পোরেট কোম্পানিগুলো এখন সরকারী সিকিওরিটিগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়। কারণ ঋণের চাহিদা কম হওয়ায় এফডিআরগুলোতে সুদের হার হ্রাস পেয়েছে।ব্যবসায়িক মন্দার কারণে অনেক ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বন্ডের বাজারকে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগের গন্তব্য হিসাবেও দেখেন অনেকে।
উচ্চতর ঋণ রেটিং সহ ব্যাংকগুলোর এফডিআরে সর্বাধিক ৩-৪ শতাংশ সুদের হার দেয়। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা এখন ট্রেজারি বন্ড (টি-বন্ড) থেকে ৩ থেকে ৬ শতাংশ সুদ পেয়ে থাকেন। যার পরিপক্কতা ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রয়েছে।
এ ছাড়া সম্প্রতি সরকার সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকে স্বীকৃতি দিয়েছে যা ১১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত সুদ সরবরাহ করে।
কোন ব্যক্তি সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে পারবেন না। যৌথ নামে বিনিয়োগের সীমা ১ কোটি টাকা।