ভুয়া ও ক্ষতিকারক ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ঔষধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসে পরিদর্শন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
সম্প্রতি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিদর্শকরা ইন্দো বাংলা ফার্মার ৯টি অনুমোদনহীন ও ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রডাক্টের প্যাকিং ম্যাটেরিয়ালস (কার্টুন লেবেল ফয়েল) কারখানার অভ্যন্তরে প্যাকিং সেন্টার জব্দ করে। ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের কোয়ালিটি কন্ট্রোল একটি আইএনএন প্রডাক্টকে বিপি প্রডাক্ট হিসেবে দেখানোর মতো গুরুতর অপরাধ করে কোয়ালিটি কন্ট্রোলের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে পরিদর্শনে উঠে এসেছে। এছাড়া অনুমোদনহীন ও নিষিদ্ধ প্রডাক্টের কাঁচামাল মজুদ থাকায় পরিদর্শকরা কোম্পানির কাছে কাঁচামাল স্ট্রোরের রেজিস্টার চাইলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ অজুহাত দেখিয়ে তা উপস্থাপন করেনি। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ঔষধ প্রশাসন অধিপ্তর এবং লাইসেন্সিং অথরিটি (ড্রাগস) মহা-পরিচালক মেজর জেনারেল মো: মাহবুবুর রহমানের স্বাক্ষরে পরিদর্শনের নির্দেশমূলক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মেসার্স ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লি:, কলেজ রোড, বরিশাল নামীয় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ও ক্ষতিকারক ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে।
এমতাবস্থায়, যৌথভাবে পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠানটির কারখানা হতে টেস্টের জন্য নতুন উত্তোলনপূর্বক ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরী, ঢাকায় প্রেরণ এবং প্রতিষ্ঠানটির আসলেই ক্ষতিকর ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করে কিনা, ঔষধ উৎপাদনে জিএমপি গাইডলাইন অনুসরণ করে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে মতামতসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ অধিপ্তরে দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
পরিদর্শক দলের সদস্যরা হলেন: ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, মতিঝিল, ঢাকার বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: অজিউল্লা এবং ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক, ঔষধ প্রশাসন, বরিশাল।
এ ব্যাপারে পরিদর্শক দলের প্রধান ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, মতিঝিল, ঢাকার বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঔষধ প্রশাসন অধিপ্তরের নির্দেশে আমরা ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস পরিদর্শন করেছি। পরিদর্শনে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি যা তদন্ত প্রতিবেদন আকারে ডিজি মহোদয়ের নিকট শিগগিরই জমা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে আসার সময় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন বা র্যাব ইন্দো-বাংলার ফ্যাক্টরীতে ব্যাপক অনুমোদনহীন ও নিষিদ্ধ ঔষধ জব্দ করে। সেই অনুমোদনহীন ও নিষিদ্ধ পন্য দেখিয়েই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন নেয় ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস। এ সংক্রান্ত অভিযোগ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে দাখিল করার পরও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে কোম্পানিটিকে পুঁজিবাজারে আসার অনুমোদন দেয়। কোম্পানিটিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে সহায়তা করে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড, ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং সিএপিএম অ্যাডভাইজরি লিমিটেড।