পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য মার্জিন ঋণের সুদের হার ১২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া নির্দেশনা আগামী বছর থেকে বাস্তবায়ন করতে চান মার্চেন্ট ব্যাংকাররা। সংগঠনটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কাছে লিখিত আবদেনও করেছে। কিন্তু বিএসইসি পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে তাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএসইসি বলছে, প্রয়োজনে মার্চেন্ট ব্যাংকারদের জন্য স্বল্প সুদে ও সহজে তহবিল যোগানের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ সুদের হার ফেব্রুয়ারি থেকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) হিসেবে, মার্চেন্ট ব্যাংকার ভেদে মার্জিন ঋণের সুদের হার সাড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ নেওয়া হচ্ছে।
গত ১৩ জানুয়ারি বিএসইসি জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়, মার্জিন ঋণের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১২ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না বাংলাদেশের স্টক ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকাররা।
মার্জিন ঋণের কস্ট অব ফান্ড বা তহবিলের খরচ হিসেবে ৩ শতাংশ সুদসহ সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ রাখতে পারবেন স্টক ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকাররা।
এ বিষয়ে বিএমবিএ সেক্রেটারি জেনারেল রিয়াদ মতিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ১২ শতাংশ মার্জিন ঋণের সুদের হার বাস্তবায়নে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে সোমবার তারা বিএসইসির কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। চিঠিতে ১২ শতাংশ সুদের হার বাস্তবায়নে আরো ১১ মাস সময়ের পাশাপাশি স্বল্প সুদে টাকা যোগাড়ে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে সুদের হার ৯ শতাংশ হলেও আমরা মার্চেন্ট ব্যাংকাররা এই সুদে ঋণ পাচ্ছি না। পুঁজিবাজার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ব্যাংকগুলো আমাদের ঋণ দিতে চায় না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, লিজিং কোম্পানিগুলো থেকে আমাদের ১২ শতাংশ হারে ঋণ নিতে হচ্ছে। এখন সুদের হার ১২ শতাংশ হলে আমরা ঋণই দিতে পারব না।
রিয়াদ মতিন আরো বলেন, কোনো বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্ট নেগেটিভ ইকুইটি হয়ে গেলে তখন সেখান থেকে সুদ নেওয়া হয় না। তখন সেই সুদেরও জের টানতে হয়। সব মিলে তাদের ‘কস্ট অব ফান্ড’ অনেক বেশি হয়। এখন যদি আমাদের ১২ শতাংশ সুদ বাস্তবায়ন করতে হয়, তাহলে আমাদের অনেক শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে। এই টাকাটা কিন্তু বাংলোদেশের পুঁজিবাজার থেকে বের হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি; চেষ্টা করছি, পুঁজিবাজারের জন্য স্বল্প সুদে টাকা আনার। সে টাকা চলে এলে মাচের্ন্ট ব্যাংকারদের জন্য সুবিধা হবে।
১২ শতাংশ সুদের হার বাস্তবায়নের সময় বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সেরকম কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা এ বিষয়ে আগে যে নির্দেশনা দিয়েছি, সেটা থাকবে।
নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে বলে মার্চেন্ট ব্যাংকারদের অভিযোগ তুলে ধরলে তিনি বলেন, এটা তো হওয়ার কথা নয়। সরকার বলে দিয়েছে, ৯ শতাংশের উপরে সুদ ব্যাংক নিতে পারবে না।