রবি আজিয়াটার শেয়ার পুঁজিবাজারে লেনদেনে আসার পর থেকে প্রথম টানা ১৪ কার্যদিবস বড় ক্রেজ ছিল। এই ১৪ দিনই শেয়ারটি চাহিদা তুঙ্গে থাকে। দর হাঁকে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায়। তবে গেল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দর কমার শীর্ষ তালিকায় হঠাৎ নাম লেখায় কোম্পানিটি। এরপর মাত্র একদিন শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেলেও পরেরদিনি আবারও পতনের কবলে পড়ে যায়। তারপর থেকেই চলে পতনের ধারাবাহিক মাতম। চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসও শেয়ারটির দর পতনের তালিকায় থাকে। এক সময়ের ক্রেজা থাকা সেই রবি শেয়ারের যেন এখন বেহাল দশা।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে রবির লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম দিন থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ১৫ কার্যদিবস দর বাড়ে কোম্পানিটির। এর মধ্যে ১৪ কার্যদিবসেই দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এতে ১০ টাকা দামের শেয়ার দেখতে দেখতে ৭০.১০ টাকায় উঠে যায়। এরপরও কোম্পানিটির শেয়ারের ক্রেতা থাকলেও এক প্রকার বিক্রেতা সংকট থাকে।
টানা ১৪ কার্যদিবস দর বৃ্দ্ধির তুঙ্গে থাকার পর গেল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৭ জানুয়ারি) প্রথম দরপতনের কবলে পড়ে রবির শেয়ার। ওইদিন লেনদেনের শেষ দিকে বিনিয়োগকারীরা দফায় দফায় দর কমিয়ে রবির শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করেও ক্রেতা পায়নি। একই চিত্র দেখা দেয় ১৮ জানুয়ারিও। অবশ্য ২০ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ার দর আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু টিকতে পারেনি। বিদায়ী সপ্তাহে রবির দর কমে ৮.৪০ টাকা ১১.৯৮ শতাংশ।
চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও কোম্পানিটির শেয়ার দরপতনের মধ্যে থাকে। সেই সঙ্গে দেখা দেয় ক্রেতার অভাব। রোববারের ধারাবাহিকতায় সোমবারও বড় দরপতন হয় কোম্পানিটির। এতে চলতি সপ্তাহের দুই কর্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার দর কমে যায় ৭ টাকা।
এতে দেখা যায়, গত ৭ কার্যদিবসে রবির শেয়ারে দর কমেছে ১৫.৪০ টাকা। এতে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারটির দর কমেছে ১৫.৪০ টাকা বা ৮ হাজার ৬৬ কোটি ৪১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এভাবে দরপতনের পর এখন কোম্পানিটির শেয়ারটি এক প্রকার ক্রেতা সংকটে ভুগছে।
অথচ এর আগে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বাড়ায় ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্কও করা হয়। এ বিষয়ে ডিএসই থেকে বলা হয়, রবির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে ৪ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে নোটিশ করা হয়। জবাবে কোম্পানিটি জানিয়েছে- সম্প্রতি শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বাড়ার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।
বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে গত ৫ জানুয়ারি ডিএসই থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। তবে এরপরও ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত লেনদেন হওয়া প্রতিটি কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কোনো কোম্পানি লেনদেন শুরুর প্রথম ১৩ কার্যদিবস দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এভাবে দাম বাড়লেও যাদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার ছিল তারা বিক্রি করতে চাচ্ছিলেন না। ফলে তখন ক্রেতা থাকলেও এক প্রকার বিক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছিল।