বর্তমান সময়ে ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলোর পরিশোধিত মূলধন ৩০-৪০ কোটি টাকা। এই সময়ের জন্য এটা খুবই নগণ্য। যুগের প্রয়োজনে ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর নিজস্ব সক্ষমতা অনেক বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান।
আজ রোববার বাণিজ্য প্রতিদিন কর্তৃক আয়োজিত ইন্সুরেন্স খাতের সমস্য ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ছায়েদুর রহমান বলেন, আমার একটা সময় ইন্সুরেন্সে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। আমার সেই অভিজ্ঞতায় এবং বর্তমানে যা দেখছি সেটা হচ্ছে ইন্সুরেন্স সেক্টরে স্বচ্চতা ও শৃঙ্খলা আনতে বড় কর্মযজ্ঞ চলছে। ইন্সুরেন্স উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইডিআরএ) ইন্সুরেন্স সেক্টরে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে। ইতোমধ্যে এখাতে অনেক কিছুর উন্নতি হয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কথা উল্লেখ করে বিএমবিএ সভাপতি বলেন, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রায় সব ইন্সুরেন্স কোম্পানি চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে এবং নয় মাসে কার্যক্রম অনেক বাড়িয়েছে এবং কোম্পানিগুলোর আয়ও অনেক বেড়েছে। এক বা দুটি কোম্পানি ছাড়া। এতে বুঝা যায় কোম্পানিগুলোর আর্থিক শৃংখলায় অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই শৃংখলা বৃদ্ধির সাথে সাথে কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে আইডিআরএ-কে কাজ করতে হবে। যাতে করে অন্যের নিরাপত্তা দেয়ার আগে নিজের নিরাপত্তার সক্ষমতা থাকে।
মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক বিমা শিল্পের তুলনায় বাংলাদেশের বিমা শিল্প খুবই নগণ্য। এখানে মাথাপিছু বিমা ব্যয় মাত্র ৯ ডলার। জিডিপির অনুপাতে বিমা প্রিমিয়ামের পরিমাণ প্রায় দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জিডিপির তুলনায় বিমা প্রিমিয়াম প্রায় ৪ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় ১.২৫ শতাংশ, ভিয়েতনামে ২.২৫ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ায় ২ শতাংশ, এবং ফিলিপিনে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
তিনি বলেন, বিমা খাতের বড় সমস্যা আস্থার সংকট। এই আস্থার সংকট দূর করতে দ্রুত সঠিক নিয়মে গ্রাহকদের বিমা দাবি পরিশোধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাংক-ইন্স্যুরেন্স (ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিমা পণ্য বিক্রি) চালু করতে হবে।
প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্তকর্তা (সিইও) মো. জালালুল আজিম বলেন, উন্নত দেশে বিমা বাধ্যতামূলক। বিমা ছাড়া ছেলে-মেয়ে স্কুলে ভর্তি করা যায় না। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া যায় না। কিন্তু আমাদের এখানে বিমার প্রয়োজন হয় না। বিমা খাতের উন্নয়নে আমাদের সামনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য এ খাতের ইমেজ সংকট দূর করতে হবে।
ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক একেএম রাশেদ শাহরিয়ার।