রাজধানীর নিকুঞ্জে অবস্থিত ডিএসইর কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ডিএসই চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৬ এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত আমাদের লিগ্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অত্যন্ত দুর্বল ছিল। আমাদের আইনকানুনের যথেষ্ট অভাব ছিল। ২০১০ সালের পর আমাদের লিগ্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে। এখন আমরা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করতে পারি যে ঘটনাগুলো ১৯৯৬ এবং ২০০৯-১০ সালে হয়েছে, তেমন ঘটনা সামনের দিনে আর ঘটবে না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান, শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান, মুনতাকিম আশরাফ, নাসরিন সুলতানা প্রমুখ।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাজারে সুবাতাস বইছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আইটি বিভাগে অনেক দুর্বলতা আছে। কিন্তু এরপরও ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের ঘটনা আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে মনে করি। কারণ এখন সার্ভিলেন্স অনেক শক্তিশালী।
তিনি বলেন, ‘শতভাগ অটোমেটেড এক্সচেঞ্জ হিসেবে আমাদের আইটি স্ট্রাকচার যেমন হওয়ার কথা ছিল, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আইটি স্ট্রাকচার সেই অবস্থায় নেই। এটা আমরা জেনেছি তিন-চার মাস আগে। জানার পরপরই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা অনেকটা কাজ এগিয়ে নিতে পেরেছি। আমাদের কনসালটেন্ট নিয়োগ হয়ে গেছে। কনসালট্যান্ট প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছে। আশা করি এ বছরের জুনের আগেই এটা হয়ে যাবে। যেটা হওয়া উচিত ছিল আরও আগে’ বলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান।
ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘২০২১ সালের শেষে অথবা ২০২২ সালে চীনের টেকনোলজি কীভাবে গ্রহণ করব, সেটার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখন নাসডাক এবং ফ্লেক্সট্রেডের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নাসডাকের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে ব্যবসার ভলিয়ম বেড়ে গেলে ফ্লেক্সট্রেডের সঙ্গে কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে শাকিল রিজভী বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে কোনো সেক্টরে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান করা হয় না। স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করার আহ্বান করা হয়। তবে কোনো কোনো সেক্টরে যদি মেনুপুলেট হয়, তাহলে বিএসইসির সহায়তায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্ভিলেন্স টিমের উচিত সেটা ধরা। তবে বিনিয়োগকারীদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।
রকিবুর রহমান বলেন, ‘২০০৯-১০ সালে আমরা বিনিয়োগকারীদের বলেছি আপনারা লোন করে আসবেন না, স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি বা বন্ধক দিয়ে আসবেন না। বিদেশে কর্মরত ভাইদের টাকা নিয়ে আসবেন না, অতিরিক্ত মার্জিন ঋণ নিয়ে আসবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের টেনশন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিয়ে। উনারা না বুঝে বিনিয়োগ করে ফেলেন। ২০০৯-১০ সালে শেয়ার কিনে আমি ৪৫ শতাংশ লোকসানে ছিলাম। সেই শেয়ার আমি বিক্রি করিনি, ধরে রেখেছি। সেই শেয়ারে আমি আজকে প্রফিট করেছি। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তো ধরে রাখতে পারবে না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বলব, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করবেন।’