টানা বাড়তে থাকা রবি আজিয়াটার শেয়ার দর অবশেষে পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। লেনদেনের প্রথম কার্যদিবস থেকে টানা ১৫ কার্যদিবস দর বাড়ার পর রোববার (১৭ জানুয়ারি) ১৬তম কার্যদিবসে এসে কোম্পানির শেয়ার দর বড় অঙ্কে কমেছে।
এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর শুধু কমেইনি, লেনদেনের শেষদিকে এক প্রকার ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয়। অথচ এর আগে দফায় দফায় দর বাড়লেও কোম্পানিটির ক্রেতার অভাব ছিল না। বরং এক প্রকার বিক্রেতা সঙ্কট ছিল।
আগের কার্যদিবসগুলোর মতো আজও লেনদেনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে শেয়ার দর বেড়ে ৭৭.১০ টাকা উঠে যায়। কিন্তু লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়তে থাকে। এতে কমতে থাকে শেয়ার দর। ৭৭.১০ টাকা থেকে নামতে নামতে দিনের লেনদেন শেষে ৬৪ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। এর ফলে আগের কার্যদিবসের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৫ টাকা ৬০ পয়সা বা ৭.৯৯ শতাংশ।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিও খরচের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) শেয়ার ছেড়ে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করা রবি’র শেয়ার গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখায়। রোববার দরপতনের আগে টানা ১৫ কার্যদিবস কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়ে।
দফায় দফায় কোম্পানিটির শেয়ারের দর বাড়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে তথ্যও প্রকাশ করা হয়। ডিএসই জানায়, শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে কোম্পানিটিকে নোটিশ করা হয়। জবাবে কাম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দর বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল সংবেদশীল তথ্য নেই।
ডিএসই থেকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয় গত ৫ জানুয়ারি। কিন্তু এরপরও কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়তে থাকে। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত লেনদেন হওয়া প্রতিটি কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দিনের দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কোনো কোম্পানি লেনদেন শুরুর প্রথম ১৩ কার্যদিবস দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।
অবশ্য ১২ জানুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন তদন্তের নির্দেশ দিলে রবির দর বাড়ার প্রবণতায় কিছুটা ছেদ পড়ে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তের নির্দেশে ১৩ জানুয়ারি লেনদেন শুরু হতেই রবির শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। বিনিয়োগকারীদের মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে এক পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় কমে যায়। তবে লেনদেনের শেষের দিকে বাজারে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, তদন্তের নির্দেশ স্থগিত করা হচ্ছে। এতে কোম্পানিটির শেয়ার আবার বাড়ে। ফলে পতন কাটিয়ে ৪০ পয়সা দর বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ করে রবি।
এরপর ১৪ জানুয়ারি আবার হু হু করে বাড়তে থাকে কোম্পানিটির শেয়ার দর এবং দিনের সর্বোচ্চ দরের সীমা স্পর্শ করে। এতে ১৫ কার্যদিবসের লেনদেনেই কোম্পানিটির ১০ টাকার শেয়ার দর বাড়ে ৬০.১০ টাকা বা ৬০১ শতাংশ।