লভ্যাংশ ঘোষণার পরেরদিন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব কোম্পানি ন্যাশনাল টিউবসের শেয়ার দর টানা কমছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা এবছর কোম্পানিটির বেশি লভ্যাংশ আশা করেছিল। প্রত্যাশা অনুযায়ী লভ্যাংশ না আশায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছে। কোম্পানিটির উপর বিনিয়োগকারীরা আস্থাহীন হয়ে পড়ায় এর দর কমছে।
জানা যায়, সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১৬ পয়সা। আগের হিসাব বছরেও কোম্পানিটি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। যদিও ওইবছর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা।
উল্লখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল টিউবসের শেয়ার দর ছিল ১২১ টাকা ১০ টাকা। ১৫ শতাংশ লভ্যাংশের গুঞ্জনে কোম্পানিটির শেয়ার দর টানা বেড়ে ১০ অক্টোবর ২০০ টাকার উপরে উঠে যায়। এরপর এর দর সংশোধনে ফিরে আসে। এক পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৬০ টাকার ঘরে স্থিতিশীল হয়ে যায়। কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণার আগের সপ্তাহে বাজারে নেতিবাচক গুঞ্জন ছড়ানো হয় যে, কোম্পানিটি এবার ‘নো ডিভিডেন্ড’ দিচ্ছে। এর ফলে পর পর তিনদিন কোম্পানিটির শেয়ার ক্রেতাশুন্য হয়ে পড়ে। লভ্যাংশ ঘোষণার তিনদিন আগে (২৯ অক্টোবর) কোম্পানিটির শেয়ার ১২৬ টাকায় ক্রেতাশুন্য হয়ে যায়।
তবে পরেরদিনই আবার বাজারে গুঞ্জন রটানো হয় কোম্পানিটি ১২ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিচ্ছে। এ খবরে এবার পর পর দুদিন এর শেয়ার বিক্রেতাশুন্য থাকে। যেদিন ডিএসইতে লভ্যাংশ ঘোষণার খবর আসে, সেদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৭৫ টাকায় লেনদেন হয়। তবে দিনশেষে ১৬৯ টাকার নিচে নেমে যায়। এর পরেরদিন থেকেই কমতে থাকে কোম্পানিটির শেয়ার দর। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার বড় অস্থিরতার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে। এটি এখন ডিএসইর লেনদেনে অস্থিরতার সর্বোচ্চ কোম্পানি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে বড় কয়েকজন বিনিয়োগকারীর মধ্যে দারুণ মতবিরোধ চলছে। সেই কারণে কোম্পানিটির শেয়ার থেকে তারা বেরিয়ে যাচ্ছে। এরফলে প্রতিদিনই লেনদেনে বড় উল্লম্ফন থাকলেও দিনশেষে শেয়ার দর থাকে নেতিবাচক প্রবণতা।
এদিকে, লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ন্যাশনাল টিউবসের পরিচালকদের স্বজনপ্রীতির গোঁমরও ফাঁস হয়ে যায়। একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, গত ৩ নভেম্বর বিকাল ৩টায় লভ্যাংশ ঘোষণার জন্য কোম্পানিটির বোর্ড সভা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বোর্ড সভায় পরিচালকদের মধ্যে একটি পক্ষ ১০ শতাংশের বেশি লভ্যংশ ঘোষণার পক্ষে অবস্থান নেয়। আর অন্য পক্ষ ৩ শতাংশ ক্যাশ ও ৩ শতাংশ বোনাস মিলিয়ে ৬ শতাংশ লভ্যাংশের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ নিয়ে সভায় দুই পক্ষের মধ্যে অনেক বাক-বিতন্ড চলে। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় সভাটি স্থগিত হয়ে যায় হয়।
উল্লেখ্য, ৬ নভেম্বর ছিল ন্যাশনাল বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সরকারি চাকুরীর সর্বশেষ কার্যদিবস। তিনি সরকারি চাকুরী হতে অবসর নেয়ার জন্য ওইদিন বিকালেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন।
শেয়ারবার্তা / আনিস