1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
বীমা খাতের অটোমেশনে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ এএম

বীমা খাতের অটোমেশনে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বীমা খাতের অটোমেশন ও উন্নয়নে ৬০০ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বীমা খাত পুরোপুরিভাবে অটোমেশনে আসবে। এতে বীমা খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ হবে, গ্রাহকদের সেবা সহজ ও স্বচ্ছ হবে এবং বীমার প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।

গত ২৬ ডিসেম্বর (শনিবার) ‘বীমা খাত: বিশ্বব্যাপী পরিবর্তন ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ডাব্লপি, গার্ডিয়ান লাইফ এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে ডিজিটাল ফ্লাটফর্মে আলোচনা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান বলেন, গ্রাহকদের বীমা দাবি সহজে ও স্বল্প সময়ে সমাধান করার বিষয়কে আমরা প্রাধিকার দিচ্ছি। বীমা খাতকে প্রযুক্তি নির্ভর করে এখাতে সব সেবা স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করা হচ্ছে। যাতে খাতটিতে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, বীমা খাতে স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় আইন-কানুন সংশোধন ও পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব কর্মকান্ডের সুফল খাতটিতে ইতোমধ্যে দেখা দিতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ২০২০ সালে বীমা খাতে ইতিবাচক অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং ২০২১ সালে খাতটিতে আরও অনেক পরিবর্তন দেখা যাবে।’

গার্ডিয়ান লাইফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম মনিরুল আলম বলেন, মহামারির প্রভাব বিবেচনা করে বীমা খাতে নতুন নতুন সেবা চালু করা হচ্ছে। এসব সেবার প্রতি গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ানো হচ্ছে।

গ্রীনডেল্টা ইন্সুরেন্সে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফারজানা চৌধুরী বলেন, অটোমেশনের কারণে বীমা খাতে কর্মকান্ড সম্প্রসারিত হবে। তিনি বলেন, অটোমেশনের ফলে বীমা সেবা সমাজের প্রান্তিক মানুষদের কাছেও সহজে পৌঁছানো যাবে।

প্রাইম ইসলামী লাইফের সিইও আপেল মাহমুদ বলেন, বীমা হলো এক ধরনের ঝুঁকি ভাগাভাগি প্রক্রিয়া। আমরা গ্রাহকদের ঝুঁকি ভাগ করে কার্যকরভাবে তাদের পাশে থাকতে চাই, তাদেরকে সঠিক সেবা দিতে চাই। খাতটি পুরোপুরি অটোমেশন হলে এসব কাজ আরও সঠিকভাবে সম্পাদন করা আমাদের জন্য সহজ হবে।’

বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ-এর সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স একাডেমির প্রধান ফেকাল্টি মেম্বার ও পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ইব্রাহিম হোসেনও অন্যান্যোর মধ্যে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

জানা যায়, বীমা খাতের অটোমেশন ও উন্নয়নে
ইন্স্যুরেন্স সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০২২ সালে শেষ হবে। এর ৬৬ শতাংশ টাকা ব্যয় হবে প্রযুক্তি খাতে। বাকি ৩৪ শতাংশ ভৌত অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থনীতির অন্যান্য খাতের তুলনায় বাংলাদেশের বীমা খাত একেবারেই অবহেলিত। বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বাংলাদেশের বীমা খাতের অবদান মাত্র ০.৬০ শতাংশ। যা প্রতিযোগী যে কোনো দেশের তুলনায় তা কম। বর্তমানে মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে বীমা খাতের অবদান ৪.৭১ শতাংশ এবং ভারতে ৪ শতাংশ।

তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশে বীমা খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্রাহকদের আস্থা সংকট। আগে কোম্পানিগুলো সিংহভাগই এজেন্টের মাধ্যমে বীমা করতো। কিন্তু অনেক সময় গ্রাহকের টাকা মূল কোম্পানিতে জমা দেয় না। ফলে গ্রাহকদের দাবি কোম্পানিগুলো অগ্রাহ্য করতো। এসব অনিয়ম নিরসনে বীমা খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় এখাতে আলোচ্য প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ইতোমধ্যে খাতটিতে বহুবিধ সংস্কারের মধ্যে স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় ব্যাংকইন্সুরেন্স চালু ও থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স বাতিল করা হয়েছে। যার ইতিবাচক প্রভাব কোম্পানিগুলোর মুনাফায় পড়তে শুরু করেছে।

প্রকল্পটি দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে আইডিআরের সামর্থ্য বাড়ানো ও বীমা একাডেমি আধুনিকায়নে কাজ করা হবে। এর মধ্যে আইডিআরের সার্বিক অটোমেশন এবং তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বীমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, বীমা খাতে ঝুঁকিভিত্তিক তত্ত্বাবধান পদ্ধতি প্রবর্তন, বীমা তথ্য বিশ্লেষণ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং বীমা একাডেমির প্রশিক্ষণ সুবিধা বাড়ানো ও আধুনিকায়ন করা হবে। আর দ্বিতীয় অংশে কোর ইন্স্যুরেন্স এপ্লিকেশন বাস্তবায়ন ও গ্রাহকসেবা ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হবে। বীমা সুবিধা বিতরণ ব্যবস্থাপনা এবং সম্পদ-দায় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা হবে এবং বিদ্যমান বীমা পণ্য পর্যালোচনা এবং যুগোপযোগী করা হবে।

আইডিআরএ সূত্র জানায় দেশের ৭৮টি বীমা কোম্পানির মধ্যে জীবন বীমা ৩১টি এবং সাধারণ বীমা ৪৮টি। দু’খাত মিলিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪৯টি। দেশের অর্থনীতির আকার অনুসারে কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু এরপর দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বীমা খাতের অবদান ১ শতাংশেরও কম। গত এক বছরে এ খাতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিদিনই দাবি পরিশোধ করছে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো। দাবি পরিশোধ না করলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে, এ ধরনের কঠোর বার্তাও দেয়া হয়েছে কোম্পানিগুলোকে। আইডিআরএ গ্রাহকদে দাবি পরিশোধের সার্বিক তত্ত্বাবধানও করছে। ফলে এখাতে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ