দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী না বুঝে বিনিয়োগ করেন। এভাবে বিনিয়োগ করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাদেরকে সঠিক বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ শিক্ষা দেওয়া লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম)।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আওতাধীন এই প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক (ডিজি) অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী এ কথা বলেছেন। এক সাক্ষাতকারে নতুন এই প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষৎ পরিকল্পানা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সাক্ষাতকারটির নির্বাচিত অংশ নিচে তুলে ধরা হলো।
বিএএসএম কখন থেকে কাজ শুরু করবে বিএসম
তৌফিক আহমেদ চৌধুরী: বিএএসএম প্রতিষ্ঠানটির গেজেট ২০১৬ সালে প্রকাশিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১৯ সালে। আর আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ২০২০ সালে। অফিস প্রস্তুত করছি। ফ্যাকালিটিতে লোকবল নিয়োগ দিচ্ছি। জানুয়ারি থেকে কিছু কার্যক্রম চালু করবো। তবে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। তাই বলে এখন বসে নেই আমি, অ্যাকাউনন্টিং স্ট্যান্ডাডের উপর প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।
বিএএসএমের লক্ষ্য কি
তৌফিক আহমেদ চৌধুরী: সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ট্রাস্টিসহ ফাইনান্সিয়াল ইন্টারমেডিয়ারি অথবা মার্কেট ইন্টারমেডিয়ারিদের ক্যাপাসিটি বাড়ানো আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ জন্য বেশ কিছু ট্রেনিং প্রোগ্রাম নেবো। পাশাপাশি বিনিয়োগ শিক্ষাকে প্রাধান্য দেবো। বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে করবো। বিনিয়োগ শিক্ষা হবে নতুন ইনভেস্টরদের জন্য। নতুন ইনভেস্টরদের সবাইকে বিনিয়োগ শিক্ষার আওতায় আসতে হবে। এমনও হতে পারে বিশ্বের অনান্য দেশের মতই যে কাউকে পুঁজিবাজারে বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) খুলতে হলে বিনিয়োগ শিক্ষা সার্টিফিকেট লাগবে। আমি কমিশনের এই প্রস্তাব রেখেছি। কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
বিনিয়োগ শিক্ষা কেন প্রয়োজন?
তৌফিক আহমেদ চৌধুরী: স্থিতিশীল পুঁজিবাজারে জন্য গড়তে হলে সঠিক বিনিয়োগ শিক্ষা লাগবেই। বিনিয়োগ শিক্ষা ছাড়া স্থিতিশীল ও গতিশীল পুঁজিবাজার সম্ভব না। স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গড়তে যে কয়টি টুলস রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিনিয়োগ শিক্ষা। ভারত, অস্ট্রলিয়া, যুক্তরাষ্ট এবং যুক্তরাজ্য সব দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। দেরিতে হলেও আমাদের দেশের বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষায় আমরা ফাইনান্সিয়াল এডুকেশন দেবো। এটা হচ্ছে নতুন ইনভেস্টরদের জন্য।মার্কেট ইন্টারমেডিয়ারি এবং ফাইনান্সিয়াল ইডুকেশন ফর প্রটেনশিয়াল ইনভেস্টর। ভবিষতে যারা আসবে তাদের জন্য। আমরা চিন্তু করছি, বিনিয়োগ শিক্ষার টা স্কুল পর্যায থেকে নিয়ে আসবো। সবাই যে পুঁজিবাজারে আসবে তা না উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ব্যাংকে বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু বিনিয়োগ করতে গিয়ে অজ্ঞতার কারণে যাতে প্রতারিত না হয় সেজন্য সে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে সিলেবাসে।
কি কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন
তৌফিক আহমেদ চৌধুরী: দেশের সবাইকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিতি করতে বিশেষ ধরনের ‘ই-লার্নিং প্লাটফম’ গড়ে তোলা হবে। নতুন ইনভেস্টর এবং দেশের সবাইকে সচেতন করতে স্কুল-কলেজ অর্থাৎ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনিয়োগ শিক্ষার (পুঁজিবাজার, ব্যাংক, বীমা ইত্যাদি বিষয়ে) বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে তুলে ধরা হবে। এরপর কলেজ অর্থা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়টি সিলেবাসে যুক্ত করা হবে। সর্বপরি বিনিয়োগ শিক্ষার নিয়ে মাস্টার্স বিভাগ চালু করা হবে।
পুরানো বিনিয়োগকারীদের জন্য কি করা হবে?
তৌফিক আহমেদ চৌধুরী: পুরানো বিনিয়োগকারীদের জন্য রি-ফ্রেশার প্রোগ্রাম করা হবে। যাতে ইনফর্মড ডিসিশন নিতে পারেন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। প্রতিবছর ফাইনেন্সিয়ায়র লিটারেসি সার্ভে করবো। দেখবো আমাদের লিটারেসির অবস্থা কি দাঁড়াচ্ছে।