দেশের পুঁজিবাজারে আগের সপ্তাহের মতো সর্বশেষ সপ্তাহে (২২-২৬ নভেম্বর) পতনে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। সপ্তাহটিতে পুঁজিবাজারের একটি বাদে সবকয়টি সূচক কমেছে। একই সঙ্গে টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। সপ্তাহটিতে সূচক ও লেনদেনের সাথে সাথে বিনিয়োগকারীরা সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজার মিলে বিনিয়োগকারীরা ৫ হাজার ৭১৮ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূলধন হারিয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইতে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরু আগে বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৯৯ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার টাকায়।
আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বিনিয়োগকারীরা ২ হাজার ৭৬৬ কোটি ২৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা মূলধন হারিয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
আর সিএসইতে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরু আগে বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ২৪ হাজার ১৬৯ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ২১৭ কোটি ৭২ লাখ ২০ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইর বিনিয়োগকারীরা ২ হাজার ৯৫২ কোটি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূলধন হারিয়েছে।
বিগত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩ হাজার ১৪৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ২৪৯ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৭৬০ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৭ টাকা বা ১৯.৪৫ শতাংশ কম হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৯০৯ কোটি ১০ লাখ ৩৮ হাজার ৯০৬ টাকার ।
এদিকে ডিএসইতে সাপ্তাহিক গড় লেনদেন হয়েছে ৬২৯ কোটি ৭৮ লাখ ৮২ হাজার ৬৫০ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৭৮১ কোটি ৮২ লাখ ৭ হাজার ৭৮১ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ১৫২ কোটি ৩ লাখ ২৫ হাজার ১৩১ টাকা কম হয়েছে।
এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০.৮৭ পয়েন্ট বা ০.২২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৬৯.০৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১০.০৩ পয়েন্ট বা ০.৮৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১১.৬৪ পয়েন্ট বা ০.৬৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১১৮.৮৫ পয়েন্টে এবং ১৬৮৯.৭০ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৬১টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৪টির বা ৩৯.৮৮ শতাংশের, কমেছে ১৪০টির বা ৩৮.৭৪ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৭টির বা ২১.৩২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি ৫৭ লাখ ২ হাজার ৮৮৯ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১১২ কোটি ০৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪৮৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার ৫৯৯ টাকা বা ২১.৮৩ শতাংশ কমেছে।
এদিকে সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬.৩৮ পয়েন্ট বা ০.০৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯৬১.৯৯ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৪.৩৮ পয়েন্ট বা ০.০৫ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ২২১.১৫ পয়েন্ট বা ১.৯২ শতাংশ এবং সিএসইা-৫০ সূচক ৯.৩৬ পয়েন্ট বা ০.৯২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮ হাজার ৪০৬.৬০ পয়েন্টে, ১১ হাজার ২৫২.১৫ পয়েন্টে এবং ১০০৯.৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর সূচক সিএসআই ৩.৮৮৪ পয়েন্ট বা ০.৪২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১৪.৩০ পয়েন্টে।
এছাড়া সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২৮টির বা ৪১.৬৯ শতাংশের দর বেড়েছে, ১০৭টির বা ৩৪.৮৫ শতাংশের কমেছে এবং ৭২টির বা ৩০.৪৫ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।