দেশের পুঁজিবাজার থেকে ভালো ব্যবসা দেখিয়ে উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করে বেঙ্গল উইন্ডসোর থার্মোপ্লাস্টিকস। তবে এখন সেই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মুনাফা সত্ত্বেও লভ্যাংশ ঘোষণা না করায় কোম্পানিটিকে অতিরিক্ত কর প্রদানের শাস্তির কবলে পড়তে হবে।
এদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের আয়কর পরিপত্র অনুযায়ি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে মুনাফার কমপক্ষে ৩০ লভ্যাংশ আকারে শেয়ারহোল্ডারদেরকে দিতে হবে। যদি ৩০ শতাংশের কম দেওয়া হয়, তাহলে রিটেইন আর্নিংসে স্থানান্তর করা পুরো অংশ বা কোম্পানিতে রেখে দেওয়া পুরোটার উপরে ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
কোম্পানিটি ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে আসে। এ কোম্পানিটি আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ২৫ টাকা করে ইস্যু করে। এতে প্রতিটি শেয়ারে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১৫ টাকা। কিন্তু সেই কোম্পানি সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া বেঙ্গল উইন্ডসোরের আইপিও পূর্ব ২০১১-১২ অর্থবছরের ৩.৫১ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে নেমে এসেছে ০.১২ টাকায়।
এই ইপিএসে কোম্পানিটির পর্ষদ ১.২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা ছিল। এছাড়া রিজার্ভ থেকে লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা ছিল। কিন্তু কোম্পানির পর্ষদ সেদিকে হাটেনি।
কোম্পানিটির ০.১২ টাকা ইপিএস হিসেবে নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ১২০ টাকা। লভ্যাংশ না দেওয়ায় এই মুনাফার উপর ১০ শতাংশ হিসেবে অতিরিক্ত ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৭১২ টাকার কর দিতে হবে।
২৫ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারটি ১৭ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের বিপরীতে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
গত কয়েক বছরে ধরেই ব্যবসায় নিম্নমূখী রয়েছে বেঙ্গল উইন্ডসোর। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ২.৫৭ টাকা। যা প্রতিবছর ধরেই কমছে। এরপরের অর্থবছরগুলোতে ক্রমানয়ে ২.৫৪ টাকা, ১.৮৫ টাকা, ১.৫৩ টাকা ও ১.০৬ টাকা হয়। যা সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ০.১২ টাকায় নেমে এসেছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, করোনায় এ কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে। তবে করোনার আগে থেকেই ব্যবসায় মন্দায় রয়েছে। কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ০.২৯ টাকা ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০.১৮ টাকা ইপিএস হয়েছিল।
তাছাড়া তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ০.০৫ টাকা। এতে করে ৯ মাসে ইপিএস হয়েছিল ০.৪১ টাকা। যা শেষ প্রান্তিকে ০.২৯ টাকা লোকসানের কারনে নেমে এসেছে ০.১২ টাকায়।