1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
যে কারণে শেয়ার বিক্রি বাড়ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ পিএম

যে কারণে শেয়ার বিক্রি বাড়ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৯

দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ডলারে বিনিয়োগ করে থাকেন। তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে যে মূলধনি মুনাফা আসে, সেটিও তারা ডলারে রূপান্তর করেই বিদেশে নিয়ে যান। ফলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। টাকার অবমূল্যায়নের সঙ্গে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডলারের বিপরীতে টাকা যত দুর্বল হয়েছে, বিদেশীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতাও তত বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ২২ মাসে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮২ টাকা ৮২ পয়সা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এসে তা ৮৩ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮৩ টাকা ৯৪ পয়সা, যা সর্বশেষ অক্টোবর শেষে ৮৫ টাকা ৭৫ পয়সায় এসে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদেশী বিনিয়োগকারীদের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ২২ মাসের মধ্যে মাত্র পাঁচ মাস বিদেশীরা শেয়ার বিক্রির চেয়ে বেশি কিনেছেন। আর বাকি ১৭ মাসই তারা কেনার চেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিট লেনদেন ছিল ১৮৭ কোটি টাকা। এর পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে এসে এটি ঋণাত্মক ৯৪ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। মার্চে আবার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিট লেনদেন দাঁড়ায় ১৫৬ কোটি টাকায়। এর পরের পাঁচ মাস ডিএসইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিট লেনদেন ছিল ঋণাত্মক। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিক্রির চেয়ে কেনার পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিট লেনদেন হয় ৩৫ কোটি টাকা। এর পরের তিন মাস অর্থাত্ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিএসইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিট লেনদেন ছিল ঋণাত্মক। এ বছরের প্রথম দুই মাস পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চেয়ে কিনেছেন বেশি। এর মধ্যে জানুয়ারিতে নিট বৈদেশিক লেনদেন ছিল ১৭৫ কোটি টাকা; ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৩২৩ কোটি টাকা। অবশ্য এর পর থেকেই টানা আট মাস দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কেনার চেয়ে শেয়ার বিক্রি করেছেন বেশি।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. শাকিল রিজভী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যখন বিনিয়োগ করেন তখন সবাই তাদের অনুসরণ করেন। আবার তারা যখন বাজার থেকে বেরিয়ে যান তখন অন্য বিনিয়োগকারীরাও তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেন। তবে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত কৌশলী। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বর্তমানে তারা শেয়ার কেনার চেয়ে বেশি বিক্রি করছেন। অন্যদিকে সূচক কমার কারণে যখন ভালো কোম্পানির শেয়ারদর যথেষ্ট কমে যায় সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদেশীরা তখন শেয়ার কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দেন।

এদিকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে। সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত যা ৪ হাজার ৭১২ পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। ২২ মাসে ডিএসইএক্স কমেছে ১ হাজার ৫৪২ পয়েন্ট। আর এ সময় ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬৬ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর অ্যাকাউন্টিং ফর ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মিজানুর রহমান বলেন, যেকোনো দেশের ক্ষেত্রেই মুদ্রার অবমূল্যায়ন হতে থাকলে সেখানকার পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি খুবই স্বাভাবিক। কারণ মুদ্রার অবমূল্যায়ন হলে বিদেশীদের বিনিয়োগের মূল্যমান কমতে থাকে, তাদের মূলধনি লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আমাদের পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ খুব বেশি না হলেও এর একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ বাড়লে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে আসতে থাকেন। আবার বিদেশীদের বিনিয়োগ কমে গেলে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। তবে আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় টাকার অবমূল্যায়নের বিষয়টি নিয়ে সরকারও সচেতন রয়েছে। ফলে টাকার অবমূল্যায়ন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে না বলে মনে করছেন তিনি।

শেয়ারবার্তা / মিলন

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ