পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে কোম্পানির সংখ্যা ৩৯টি। এই ৩৯টি কোম্পানির মধ্যে গত তিন বছরে মুনাফার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে ৫টি কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো-আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং, বিডি অটোকারস, বিবিএস কেবলস, নাহি এ্যালুমিনিয়াম ও সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলো ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মুনাফায় প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে পারলেও সদ্য সমাপ্ত ২০২০ সালের (২০১৯-২০ অর্থবছর) প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’১৯-মার্চ’২০) বিডি অটোকারস, বিবিএস কেবলস ও নাহি এ্যালুমিনিয়াম মুনাফার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। তবে আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং ও সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ মুনা্ফার ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে। যদিও আলোচ্য সময়ে এখাতের ৩৪টি কোম্পানির মুনাফাই আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিবিএস কেবলস, নাহি এ্যালুমিনিয়াম ও সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ মার্জিন শেয়ার। আর আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং ও বিডি অটোকারস নন-মার্জিন শেয়ার। সর্বশেষ দর অনুযায়ী বিবিএস কেবলসের পিই ৬.৭৩, সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজের ৮.৮১, নাহি এ্যালুমিনিয়ামের ১৮.২৭, আনোয়ার গ্যালভেনাইজিংয়ের ৪১.৫৫ এবং বিডি অটোকারসের ১৫১.০৪।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সু্হ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ ছাড়া বাকি সবগুলো কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ৩০ শতাংশের বেশি রয়েছে। কেবল সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজের উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার রয়েছে মাত্র ১২.০১ শতাংশ।
আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং লিমিটেড: কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা, ২০১৮ সালে ১ টাকা ২৪ পয়সা এবং ২০১৯ সালে ১ টাকা ৫১ পয়সা।
সদ্য সমাপ্ত ২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’১৯ হতে মার্চ’২০ পর্যন্ত) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৭ পয়সা।
২০১৭ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে ১০ শতাংশ স্টক, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ।
সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ী এর পিই ৪১.৫৫। কোম্পানিটির মোট ১ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের রয়েছে ৩৫.৩২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩.৩৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪১.৩০ শতাংশ।
বিডি অটোকারস লিমিটেড: ১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিডি অটোকারস। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৯৫ পয়সা, ২০১৮ সালে ১ টাকা ৫২ পয়সা এবং ২০১৯ সালে ১ টাকা ৫৩ পয়সা।
সদ্য সমাপ্ত ২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’১৯ হতে মার্চ’২০ পর্যন্ত) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৭৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টকিা ৫ পয়সা।
২০১৭ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৩ শতাংশ স্টক, ২০১৮ সালে ৩ শতাংশ ক্যাশ ও ১২ শতাংশ স্টক এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ।
সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ী এর পিই ১৫১.০৪। কোম্পানিটির মোট ৪৩ লাখ ২৬ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের রয়েছে ৩৪.৮৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৮.৩১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৬.৯৬ শতাংশ।
বিবিএস কেবলস লিমিটেড: ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিবিএস কেবলস। তালিকাভুক্তির বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৪ টাকা ১২ পয়সা। এরপর ২০১৮ সালে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৯ টাকা ৮ পয়সা এবং ২০১৯ সালে ৯ ১৭ পয়সা।
সদ্য সমাপ্ত ২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’১৯ হতে মার্চ’২০ পর্যন্ত) এর শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৬ টাকা ৫৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৭ টাকা ২৯ পয়সা।
২০১৭ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ স্টক, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ স্টক এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক।
সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ী এর পিই ৬.৭৩। কোম্পানিটির মোট ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৭০ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের রয়েছে ৩২.৭৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮.৮৬ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ১.৯১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৬.৫৯ শতাংশ।
নাহি এ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড: ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় নাহি এ্যালুমিনিয়াম। তালিকাভুক্তির বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ৫৬ পয়সা। ২০১৮ সালে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৩ টাকা ৮ পয়সা এবং ২০১৯ সালে ৩ টাকা ৭৮ পয়সা।
সদ্য সমাপ্ত ২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’১৯ হতে মার্চ’২০ পর্যন্ত) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ৩৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৬০ পয়সা।
২০১৭ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক, ২০১৮ সালে ৭ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক।
সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ী এর পিই ১৮.২৭। কোম্পানিটির মোট ৬ কোটি ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের রয়েছে ৩৯.৫৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৬.৫৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৩.৬৯ শতাংশ।
সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড: ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ। তালিকাভুক্তির পর তিন বছর কোম্পানিটি কিছুটা লোকসানে ছিল। ২০১৭ সালের পর থেকে কোম্পানিটি মুনাফায় থাকে। ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.৫৭ টাকা। ২০১৮ সালে ০.৪১ টাকা এবং ২০১৯ সালে ১.৩৮ টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে কোম্পানিটির মালিকানা পরিবর্তন হয়। তখন থেকেই মূলত কোম্পানিটি ভালো করতে থাকে।
সদ্য সমাপ্ত ২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’১৯ হতে মার্চ’২০ পর্যন্ত) এর শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৮৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৭ পয়সা।
২০১৭ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। ২০১৮ সালে দিয়েছে ১০ শতাংশ স্টক এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ।
সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ী এর পিই ৮.৮১। কোম্পানিটির মোট ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫০টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের রয়েছে ১২.০১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২০.০১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬৭.৯৮ শতাংশ।