সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার বিক্রয়, হস্তান্তর ও প্লেজ বন্ধ করা সহ কোম্পানিগুলোকে মূূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে,সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারে বিক্রয়, হস্তান্তর ও প্লেজ বন্ধ করার পাশাপাশি কমিশন বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি জানান, তালিকাভুক্ত ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানিগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিচালনা পর্ষদের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো মধ্যে রয়েছে-
১. সকল স্পন্সর (উদ্যোক্তা) ও বর্তমান পরিচালকদের ধারণ করা শেয়ার বিক্রয়, হস্তান্তর-স্থানান্তর এবং প্লেজ বন্ধ থাকবে।
২. ‘জেড’ গ্রুপে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর ছয় মাসের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে হবে।
৩. সকল ধরনের শেয়ার হোল্ডার মিটিং (এজিএম/ইজিএম) ই-ভোটিং/অনলাইন ভোটিংয়ের সুবিধা দিয়ে ডিজিটস প্লাটফর্মে অথবা হাইব্রিড সিস্টেমে করতে হবে।
৪. যে সকল কোম্পানি দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে ‘জেড’ গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত সেই কোম্পানিগুলোকে ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে চলমান বোর্ড পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে বর্তমান পরিচালক ও স্পন্সররা অন্য কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী কোনো কোম্পানির পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না।
৫. কমিশন এক্ষেত্রে বিশেষ নিরীক্ষক ও কমিশন কর্তৃক পর্যবেক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে বোর্ড পুনর্গঠন করে ‘জেড’ গ্রুপে কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করবে।
৬. পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ চার বছরের মধ্যে কোম্পানির সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হলে স্টক এক্সচেঞ্জ ওই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতিসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৭. এ বিষয়ে পূর্ববর্তী নোটিফিকেশন এবং আদেশ বাতিল করে শিগগির কমিশন একটি নোটিফিকেশন ইস্যু করবে।
কী কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ‘জেড’ গ্রুপে চলে যাবে তার ক্ষেত্রেও নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এ জন্য ২০১৩ সালের সেটেলমেন্ট অ্যান্ড ট্রানজেকশন বিধিমালা সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
যে কারণে ‘জেড’ গ্রুপে যাবে কোম্পানি-
১.পরপর দুই বছরের মধ্যে নগদ লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলে।
২.পরপর দুই বছর বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করতে ব্যর্থ হলে।
৩.ছয় মাস বা বেশি সময় কোম্পানি উৎপাদন বা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে।
৪.পরপর দুই বছর নিট কার্যকর লোকসান অথবা পরিচালন নগদ প্রবাহ ঋণাত্মক থাকলে।
৫.কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের জন্য কমিশনের অনুমতিক্রমে স্টক এক্সচেঞ্জ ‘জেড’ গ্রুপে স্থানান্তর করতে পারবে।
৬.যদি তালিকাভুক্তি কোম্পানীর পুঞ্জিভূত লােকসান তার পরিশােধিত মূলধনকে অতিক্রম করে; এছাড়াও, কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের জন্য কমিশনের অনুমতিক্রমে স্টক এক্সচেঞ্জয় জেট ক্যাটাগিরিতে স্থানান্তর করতে পারবে।
জেড ক্যাটাগরি নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড কমিশন (বিএসইসি)।
উল্লেখ্য যে, জেড ক্যাটাগরিরতে লেনদেনকৃত কোম্পানিসমূহের সেটেলমেন্ট কার্যক্রম টি+৩ সম্পন্ন হবে।