বিগত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে তার দ্বিগুণের বেশি। বড় অংকের অর্থ ফেরার সপ্তাহে বেড়েছে সবকটি মূল্য সূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
বিগত সপ্তাহে কিছুটা উত্থানে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। সপ্তাহজুড়ে উভয় পুঁজিবাজারের প্রধান প্রধান সূচক বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের সপ্তাহ থেকে কমেছে। সপ্তাহটিতে দুই পুঁজিবাজারে ৩ হাজার ৯ শত ৮ কোটি ৮৬ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে।
জানা গেছে, বিগত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ২৩৭ কোটি ৮০ লাখ ৭৪ হাজার ৩২২ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ২৭০ কোটি ২৩ লাখ ৩৩ হাজার ২৯৭ টাকা বা ১৭.৯২ শতাংশ বেশি হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫০৮ কোটি ৪ লাখ ৭ হাজার ৬১৯ টাকার।
ডিএসইতে বিগত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ ১৪ হাজার ৮৬৪ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৩০১ কোটি ৬০ লাখ ৮১ হাজার ৫২৪ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৫৪ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬০ টাকা কম হয়েছে।
বিগত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫২৮ কোটি ১১ লাখ ৮৮ হাজার টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার ৪৭৭ কোটি ৪৫ লাখ ২২ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন ২ হাজার ৫০ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বা ০.৬৫ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১.৮৩ পয়েন্ট বা ০.২৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮০.৯৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ০.৬১ পয়েন্ট বা ০.০৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৮৩ পয়েন্ট বা ০.৪৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯৪৬.৪২ পয়েন্টে এবং ১৩৭৪.৪৯ পয়েন্টে।
বিগত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৩টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৬টির বা ৩৮.০৯ শতাংশের, কমেছে ৫২টির বা ১৪.৫৬ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬৯টির বা ৪৭.৩৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিগত সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার ১৪১ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৪ কোটি ৮৮ লাখ ৭৪ হাজার ৯২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ২৩ হাজার ৯৫১ টাকা বা ৫৩.৫৭ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬২.৯৯ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৬২২.২৩ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৩৭.২৯ পয়েন্ট বা ০.৫৩ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ১.৩৪ পয়েন্ট বা ০.১৬ শতাংশ এবং সিএসআই ৩.০৫ পয়েন্ট বা ০.৪১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৭ হাজার ৪৪.৬৪ পয়েন্টে, ৮৩৭.৩৩ পয়েন্টে এবং ৭৫১.৬৬ পয়েন্টে। অপর সূচক সিএসই-৩০ সূচক ২০.৯৭ পয়েন্ট বা ০.২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫০.৮৮ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৯টির বা ৩১.৫৬ শতাংশের দর বেড়েছে, ৪৬টির বা ১৬.৩১ শতাংশের কমেছে এবং ১৪৭টির বা ৫২.১২ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর বাজার মূলধন ১ হাজার ৮৫৭ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ০.৭৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৭২ কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার টাকায়। আগের সপ্তাহে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৮৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ অবদান ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে-গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, বেকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ফাইন ফুডস এবং সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স।