বিদায়ী সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। এরপরও গেল সপ্তাহে পুঁজিবাজারে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ফিরে এসেছে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে বাজারে এ টাকা ফিরেছে।
বড় অঙ্কের অর্থ ফেরার সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাছাই করা সূচকটি বাদে বাকি দুটি সূচক বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ চার কার্যদিবস টানা দরপতন হলেও প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থান হয়। এ কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ও ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক বেড়েছে।
তবে যে কয়কটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে তার থেকে বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। অবশ্য গত কয়েক সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও লেনদেনে অংশ নেয়া অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত থাকে।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির। আর ১৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৪৭৭ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ সূচকটি বাড়ল। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৭৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বাড়ে।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বেড়েছে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে ২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বাড়ে সূচকটি। অর্থাৎ এ সূচকটিও টানা চার সপ্তাহ বাড়ল।
বাছাই করা ভালো কোম্পানি গঠিত ডিএসইর আর একটি সূচক ডিএসই-৩০। এ সূচকটি গত সপ্তাহে কমেছে দশমিক ৬১ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২৯ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে ৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বাড়ে সূচকটি। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহ বাড়ার পর সূচকটি কমল।
এদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩০১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১৮৮ কোটি ১১ লাখ। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১১৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ৬০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৯৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৫৬৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৮৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের অবদান ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের দশমিক ৫৬ শতাংশ অবদান ছিল।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, গ্রামীণ ফোন, ওরিয়ন ফার্মা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মুন্নু সিরামিক।