আজ সিসিবিএলের প্রথম পরিচালনাপর্ষদের সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক কমিশনার আব্দুস সালাম সিকদারকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয় বলে শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ জুন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ সম্পন্ন করে এবং ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম পরিচালনাপর্ষদের সভা অনুষ্ঠানের জন্য সিসিবিএল-কে চিঠি দেয়।
১৪ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ পরিচালনাপর্ষদের ১১ সদস্য নিয়ে প্রথম পরিচালনাপর্ষদের সভা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। বাকি দুজন শেয়ারধারক পরিচালকের একজন ঢাকা স্টক একচেঞ্জ থেকে এবং একজন কৌশলগত বিনিয়োগকারী থেকে আসবেন এবং সিসিবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরবর্তীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।
স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসি’র সাবেক কমিশনার সালাম সিকদার, সিডিবিএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এইচ সামাদ, সানোফি’র সাবেক অর্থ পরিচালক মোহাম্মদ তাজদিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, বেসিস’র সাবেক পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিন্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারেক।
প্রথম সভায় উপস্থিত চারজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের মধ্যে ছিলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক ও সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সিসিবিএলের ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আনিস এ খান৷
সালাম সিকদার ২০১১ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগদান করেন৷ তিন বছরের প্রথম মেয়াদ সম্পন্ন হওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে আরও চার বছর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷
সালাম সিকদার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (জুডিশিয়াল) ক্যাডারের সদস্য হিসেবে সর্বশেষ বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ থাকা অবস্থায় ২০১১ সালে অবসর গ্রহণ করেন৷
তিনি ১৯৭৯ সালে পিরোজপুর কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন৷ ১৯৮৩ সালে তিনি পিরোজপুর জেলা বারের সদস্য হিসেবে আইন ব্যবসা শুরু করেন৷
১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (জুডিশিয়াল) ক্যাডারে সহকারী জাজ হিসেবে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে সাব জাজ, অতিরিক্ত জেলা জাজ এবং জেলা জজ হিসেবে প্রথমে বরিশাল ও পরবর্তী সময়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন৷ চাকরিকালে তিনি বিচার প্রশাসন, সার্ভে অ্যান্ড সেটেলম্যান্ট, বিশেষ বুনিয়াদী প্রশিক্ষণসহ বেশকিছু প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন৷
তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের বিহার রাজ্যে চাকুলিয়া ট্রেনিং সেন্টারে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে ৯নং সেক্টরে সক্রিয়ভাবে পাকিস্তানি মিলিটারিদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন৷ ৬৯ এর গণআন্দোলন এবং ছয় দফার অনুকূলে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য জনগণকে উদ্ভূদ্ধ করেন তিনি৷
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অটোমেশন শুরু হয় ৯০ দশকের শেষের দিকে আর্থিক প্রযুক্তি সংস্থাপনের মাধ্যমে৷ দেশের পুঁজিবাজারের অব্যাহত আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসাবে বাজার কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারগণ স্টক এক্সচেঞ্জকে আধুনিকীকরণ, সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন৷
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার একটি যুগোপযোগী সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট) বিধি, ২০১৭ প্রণীত হয়৷ উল্লেখিত বিধির অধীনে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) নামে একটি কোম্পানি গঠিত ও নিবন্ধিত হয়৷