বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গলা ব্যথা,শুকনা কাশি,সর্দি আতঙ্কের উপসর্গ। তবে এগুলোর সঙ্গে আমরা বহু আগে থেকেই পরিচিত। আর এগুলো হলেই যে আপনি ‘কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত এমনটা নয়।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে গলাব্যথা,শুকনা কাশি,সর্দি যদি থাকে তাহলে তা করোনার সংক্রমণের সংকেত দেয়। এ কারণে শুরু থেকেই এই সমস্যার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
যেহেতু এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক নেই এ কারণে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।যা আপনাকে সংক্রমণের থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
গলা ব্যথার সঙ্গে শুকনো কাশি,সর্দি থাকলে বুঝতে হবে আপনি কোনো ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন, যা সময় মতো ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা বড় হতে পারে।
যেহেতু এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক নেই এ কারণে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।
মধু-আদার মিশ্রণ:
আদায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, যা শরীরের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে।সেই সঙ্গে সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া আদা গলা ব্যথার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। আর আদার সঙ্গে মধু মেশালে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় গলাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। ঠান্ডায় টনসিলাইটিস ফোলা তার থেকে ব্যথা, মাথাব্যথা, টাইফয়েড জ্বর, নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদিতে মোক্ষম দাওয়াই আদা। আদা চা পান করে এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে।
লেবু:
লেবুর উচ্চ ভিটামিন যা শরীরের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যে কোন ভাইরাস জনিত ইনফেকশন যেমন ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর দমনে লেবু খুব কার্যকারী, মুত্রনালীর ক্ষত সারাতেও লেবুর গুরুত্ব রয়েছে। পেটের গোলযোগের মধ্যে ডায়রিয়া, বদহজম, কোষ্টকাঠিন্য, আমাদের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়, শুরুতে এক গ্লাস লেবু+লবন পানি আপনাকে এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দেবে। লেবুর সঙ্গে এক চা চামচ মধু হলে আরো ভাল। লেবুতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ দেহের হরমোনকে সক্রিয় রাখে ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
লবঙ্গ :
সর্দিকাশির মহৌষধ হিসেবে লবঙ্গ বহু বছর ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। লবঙ্গ চিবিয়ে রস গিলে খেলে বা লবঙ্গ মুখে রেখে চুষলে সর্দি, কফ, ঠাণ্ডা লাগা, অ্যাজমা, গলাফুলে ওঠা, রক্ত পিত্ত আর শ্বাস কষ্টে সুফল পাওয়া যায়।লবঙ্গ শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো সরিয়ে রক্তকে পরিশোধন করতে ভূমিকা রাখে। রক্তকে পরিস্কার করে।লং এর মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিকারসিনোজেনিক, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়া, অ্যান্টিইনফ্লেমেটোরি, হেপাটো-প্রোটেক্টিভসহ আরো অনেক বায়ো অ্যাক্টিভ উপাদান পাওয়া যায়। লবঙ্গ কলেরা, যকৃতের সমস্যা, ক্যান্সার, শরীরে ব্যথা ইত্যাদি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ যে কোনও ধরনের জীবাণুকে মেরে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। লবঙ্গে থাকা ভিটামিনকে এবং ই, রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে দেয় যে শরীরে উপস্থিত ভাইরাসে রাসব মারা পরে।
তেজপাতা:
আপনি যদি ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হন ও কাঁশির সমস্যায় ভোগেন তাহলে ব্যাকটেরিয়া তাড়াতে এটি আপনাকে চমৎকারভাবে সাহায্য করবে। ৪-৫টি তেজপাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করুন। পানি কুসুম ঠাণ্ডা করে নিন।তেজপাতার ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল’ উপাদান শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন প্রদাহ কামাতে সহায়ক। সর্দিকাশি, কফ এবং ফ্লু থেকে মুক্তি পেতে তেজপাতা সিদ্ধ করে খেতে কিংবা বুকে মাখা যেতে পারে।
করোনা পরিস্থিতিতে গলা ব্যথা,শুকনা কাশি,সর্দি হলে প্রাথমিকভাবে যা করবেন:
প্রথমে ২-৩ চা চামচ মিছরি নিবেন তারপর ২টি তেজপাতা,৫টি লবঙ্গ,সামান্য পরিমাণ আদা,৪ ভাগের ১ ভাগ লেবু নিবেন তারপর ১ গ্লাস পানি তে এই উপাদানগুলো যোগ করুন। এরপর গরম পানিতে এগুলো সিদ্ধ করুন। পানি কুসুম ঠাণ্ডা করে চা এর মতো পান করুন।এভাবে সকালে এবং রাতে পান করুন।এতে আশা করা যায় মাত্র ২-৩ দিনের মধ্যে আপনি গলা ব্যথা,শুকনা কাশি,সর্দি হতে মুক্তি লাভ করতে পারেন।
তবে পাঠক মনে রাখবেন, এই পদ্ধতিগুলো গলা ব্যথা ,শুকনা কাশি,সর্দি হতে আপনাকে স্বস্তি দিতে কাজ করবে। তবে এগুলো করোনা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক নয়।সূত্র ইসমাইল হোসাইন ভেষজ গবেষক,যোগাযোগ ই-মেইল : [email protected]