বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের মূল সমস্যা সুশাসন বা গভর্নেন্স বলে অভিহিত করেছেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি’র চেয়ারম্যান এবং ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিমত দেন তিন যুগেরও বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ব্যাংকার।
শুক্রবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রেজা ইফতেখার বলেন, আমি প্রায় ৩৭ বছর ধরে ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে আছি এবং ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব পালন করছি।
‘আমাদের বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন করা হয়েছে বাংলাদেশে ব্যাংকের প্রধান সমস্যা কী। অনেকে অনেক কিছু বলেন। বিরাট বিরাট স্লাইড দেখান, অনেক কারণ বলেন। আমার কাছে বিগেস্ট ইস্যু হচ্ছে গভর্নেন্স এবং নন পারফর্মিং লোন।’
তিনি বলেন, গভর্নেন্স শুধু বোর্ডের বিষয় নয়। গভর্নেন্স বলতে ম্যানেজমেন্ট গভর্নেন্স দরকার আছে। ডিরেক্টরদের গভর্নেন্স দরকার আছে। রেগুলেটর গভর্নেন্স দরকার আছে। এই গভর্নেন্সের কারণেই আজকে ব্যাংকে এনপিএল (খেলাপি ঋণ) অনেক হাই।
অভিজ্ঞ এই ব্যাংকার বলেন, অনেকে অনেক টেকনিক্যাল টার্মস বলেন। সিলেকশন অফ রঙ বরুয়ার (ভুল ঋণ গ্রহীতা নির্বাচন), প্রসেস ভালো না, ম্যানেজমেন্ট স্কিল নেই, রিক্স ম্যানেজমেন্টের লোক কম, কালেকশন ভালো না এমন অনেক কথা বলেন। আসলে এগুলো অনেক পরে আসছে। আমাদের প্রথমেই করপোরেট গভর্নেন্স বা ম্যানেজমেন্ট গভর্নেন্স যেটাই বলেন ঠিক করতে হবে। এটা ঠিক থাকলে ব্যাংকের এনপিএল আরও কমে যাবে।
তিনি বলেন, গভর্নেন্স ও এনপিএল এই দুটা হলো ব্যাংকের বিগেস্ট চ্যালেঞ্জ। এর একটা রিজেন্ট, আরেকটা হলো রেজাল্ট। রিজেন্ট হচ্ছে গভর্নেন্স, আর রেজাল্ট হচ্ছে এনপিএল। যদিও রেজাল্ট খুব একটা ভালো নয়।
আলী রেজা ইফতেখার আরও বলেন, আমরা এখন বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ভার্চুয়ালে করতে পারব, এটা অনেক ভালো হয়েছে। এতে ব্যাংকের ট্রান্সপারেন্সি অনেক বেটার হবে, প্রচুর লোক দেশ-বিদেশ থেকে জয়েন করতে পারবে। আমাদের অনেক খরচ কম হবে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু সময় আমরা একটু অসুবিধার মধ্যে পড়ি। যেমন কিছু কিছু আইন বা কিছু সার্কুলার যা বাংলাদেশ ব্যাংক ইস্যু করেছে, সেটার সঙ্গে কোনো কোনো সময় বা কয়েকটা জায়গায় বিএসইসির সার্কুলার সাংঘর্ষিক।
ফলে কোনোরকম দোষ ছাড়াই অডিটর বড় রকম নেগেটিভ রিপোর্ট দেয় বলে জানান এই ব্যাংকার। এ কারণে এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের সহায়তা কামনা করেন তিনি।