বিমা খাতের কোম্পানি এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন জমা নেওয়া শুরু হচ্ছে আজ। চলবে আগামী ১৮ জুন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২৬ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করবে। কোম্পানিটি ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে ২ কোটি ৬০ লাখ ৭৯ হাজার সাধারণ শেয়ার ইস্যু করবে।
বর্তমানে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩৯ কোটি ১১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৪০ টাকা। কোম্পানিটির আইপিও পরবর্তী পরিশোধিত মূলধন হবে ৬৫ কোটি ১৯ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪০ টাকা।
মূলত আইনী শর্ত পরিপালনে বাজারে আসছে এই কোম্পানি। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলন করা অর্থের ৭৯ শতাংশ বা প্রায় ২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখবে অথবা ট্রেজারি বন্ড কিনবে। উত্তোলিত অর্থের ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করবে পুঁজিবাজারে। আর বাকী ৬ শতাংশ ব্যয় হবে আইপিওর খরচ হিসেবে।
কোম্পানির প্রসপেক্টাস পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৪ সালে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের নিট মুনাফা ছিল ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর পর থেকে প্রতি বছরই তা ক্রমাগত কমেছে। সর্বশেষ ২৯১৪ সালে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে মাত্র ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা অর্ধেকে নেমেছে।
শেয়ার প্রতি আয়ের ক্ষেত্রে চিত্রটা আরও খারাপ। ২০১৮ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা। আগের চার বছরে ইপিএস ছিল যথাক্রমে ১ টাকা ২০ পয়সা (২০১৭), ১ টাকা ২৬ পয়সা (২০১৬), ১ টাকা ৪৪ পয়সা (২০১৫), ২ টাকা ৬৪ পয়সা (২০১৪)।
এদিকে রয়েল ক্যাপিটাল লিমিটেডের আইপিও বিশ্লেষণ প্রতিবেদন অনুসারে, শুধু মুনাফা ও ইপিএস কমছে না এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের, প্রতিযোগিতা থেকেই পিছিয়ে পড়ছে দিন দিন। তাই বীমা খাতের গড় ইপিএসের তুলনায় এই কোম্পানির ইপিএস কমছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সালে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস ছিল বীমা খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর গড় ইপিএসের কাছাকাছি। ২০১৮ সালে সেটি সেক্টরাল গড় ইপিএসের প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
একই অবস্থা রিটার্ন অন ইক্যুইটিতেও। ২০১৪ সালে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের রিটার্ন অন ইক্যুইটি ছিল ১৩ শতাংশ, আর বীমা খাতের গড় রিটার্ন ছিল ১০ শতাংশ। ২০১৮ সালে গড় রিটার্ন দাঁড়ায় ৮ শতাংশ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের রিটার্ন হয় ৬ শতাংশ।
কোম্পানিটি আইপিও থেকে উত্তোলন করা অর্থের বড় অংশ এফডিআর (মেয়াদী আমানত) ও ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করবে। এই খাতে সুদের হার আগের মতো আকর্ষণীয় নয়, তা ৬ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে। তাই এখাত থেকে ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার মতো রিটার্ন পাওয়া প্রায় অসম্ভব।