আপনি আপনার অর্থকে কোন খাতে বিনিয়োগ করবেন,সেটা একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। তবে যেখানে রিটার্ন বেশি সেখানে মানুষ বিনিয়োগ করতে বেশিরভাগ আগ্রহী। একজন নতুন বিনিয়োগকারীর জন্য সব সময়ই সতর্ক থাকতে হবে, কারণ বিনিয়োগ কোন কোনো নাটরের কাঁচাগোল্লা মতো বিষয় নয়। প্রথম বিনিয়োগে আপনার সমস্ত অর্থ লোকসান হতেই পারে। কিন্তু তাতে হতাশ হয়ে ভেঙ্গে পড়া যাবে না। এজন্য বাজার সম্পর্কে বেশি বেশি জানতে হবে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে একজন নতুন বিনিয়োগকারীকে এই বিষযগুলো মনে রাখতে হবে। তাহলেই হয়তো আপনি হয়ে উঠতে পারবেন একজন সফল বিনিয়োগকারী।
অন্ধভাবে বিনিয়োগ না করাঃ
বিনিয়োগের সময় না বুঝে অন্ধ হলে চলবে না। অন্ধভাবে কোনো শেয়ার কেনা মানেই- আপনি কোনো বিনিয়োগ করছেন না বরং আপনি মরিচিকার পিছনে ছুটছেন। বিনিয়োগ তাই- যা বুঝেশুনে নেওয়া হয়। যা আপনাকে স্বস্তিতে রাখে।ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।
গবেষণাকে গুরুত্ব দেওয়াঃ
অনেকেই আছেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গবেষণাকে গুরুত্ব দেন না। তারা বিনিয়োগ করার কথা তাই বিনিয়োগ করেন বা বাজারের ভাইদের কথা মতো বিনিয়োগ করেন। বিনিয়োগকারীকে তাই সব সময় গবেষণাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ কোম্পানির গবেষণাই বলে দেয় ওই কোম্পানি, তার পণ্য, ব্যবসা, আয় ও ভবিষ্যৎ কিরূপ হতে পারে। ধরুণ, আপনি কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে ওই কোম্পানি সম্পর্কে এবং তার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সম্পর্কে জানুন। এরপর আপনি সিদ্ধান্ত নেন কি করবেন।
সময়কে যথাযথ মূল্য দিনঃ
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের আগে সময় জ্ঞান করা জরুরি।ধরুন, আপনি একটি বাড়ি কেনার জন্য অর্থ সঞ্চয় করছেন; তাহলে মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা করতে পারেন। আবার যদি আগেভাগে বিনিয়োগ করতে চান, তবে সেটা হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী। এখন আপনাকে নিতে হবে বিনিয়োগের সময়োপযোগী সিন্ধান্ত।তাহলে আপনি হতে পারবেন সফল বিনিয়োগকারী।
মুনাফা প্রত্যাশা ও ঝুঁকির মধ্য ভারসাম্য রক্ষাঃ
বিনিয়োগে যেমন মুনাফা প্রত্যাশা থাকবে, তেমনি ঝুঁকিও থাকবে। অবশ্যই এ দুইটার মধ্যে ভারসাম্য বিবেচনায় নিতে হবে; যাতে কোনো ক্রমে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা থাকে।কিন্তু ভুল সিদ্ধান্ত থেকে বের হতে পারলে ঝুঁকি কম থাকবে।
অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবেঃ
আপনার সহ্য ক্ষমতা যতটুকু থাকবে;আপনি ঠিক ততটুকু ঝুঁকি নিতে পারেন। এর বেশি নয়। মার্কেটের শেয়ার দর উঠা-নামাকে সহ্য করতে না পারলে সেক্ষেত্র আপনাকে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্লু-চিপ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কারণ এ ধরণের কোম্পানিতে শেয়ার দরের ওঠানামা তুলনামূলক কম থাকে।
সব অর্থ এক পাত্রে নয়ঃ
কখনও সব অর্থ এক পাত্রে রাখা ঠিক নয় ।এতে সব অর্থ লোকসান হতে পারে।ধরুন,আপনি সব ডিম এক ঝূঁড়িতে রেখেছেন আর কোন কারণ বশতও ঝূঁড়িটা ছিদ্র হলে সব ডিম পড়ে ভেঙ্গে যেতে পারে এতে আপনি সব অর্থই হারাতে পারেন। বিনিয়োগে বহুমুখীকরণ হলে এ ধরণের ক্ষতি থেকে পোর্টফোলিওকে মুক্ত রাখা সম্ভব। আপনি যদি কয়েকটা কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন; তবে কোনো কোম্পানিতে লোকসান হলে অন্যটাতে লাভ হবে। তাতে আপনার পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আর একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন তবে আপনার সব অর্থই চলে যেতে পারে। তাই সব অর্থ এক পাত্রে রাখা ঠিক নই।
দাম কমলেই শেয়ার কেনা বন্ধ করুনঃ
কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেই তা কিনতে হবে এমন নীতি পরিহার করতে হবে। কারণ দাম কমলেই যে ওই শেয়ার কিনে আপনি লাভবান হবেন- এমন নয়। আপনাকে জানতে হবে কেন দাম কমল, ভবিষ্যতে তা কি পরিমাণ বাড়তে পারে, কেন বাড়বে সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে।
ট্যাক্সের কথা মাথায় রাখতে হবেঃ
আপনার বিনিয়োগকৃত শেয়ারে মুনাফার উপর সরকার কতটুকু ট্যাক্স আরোপ করছে- সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।না হলে সমস্যা পরতে হতে পারে।
লেনদেনের ফি মাথায় রাখাতে হবেঃ
আপনাকে বিনিয়োগে ব্রোকারেজ হাউজের ফি এর কথা মাথায় রাখতে হবে। এটাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। আবার যেসব হাউজ বেশি ফি নিচ্ছে সেটাও মাথায় থাকতে হবে। কারণ তুলনামূলক কম ফি আপনার বিনিয়োগের রিটার্নকে এগিয়ে দিতে পারে।
এই বিষয়গুলো যদি মাথায় রাখতে পারেন তবে আপনি ও হতে পারেন টপটেন গেইনার।