শেয়ারবাজারে আসতে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ডেল্টা হসপিটালের নিলাম (বিডিং) হলেও তা সুফল আনতে পারেনি। এই নিলামের পরেও কোম্পানিটি আইপিওতে শুধুমাত্র অভিহিত মূল্য শেয়ার ইস্যুর যোগ্যতা অর্জন করেছে। যা কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে শেয়ারধারন ৩০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনবে। এছাড়া ১০ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের মধ্যে ৭ জনেরই শেয়ারধারন ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। কিন্তু সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ রাখার বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি ২ শতাংশে ব্যর্থদের পর্ষদ থেকে বিতাড়িত করার বিধান রয়েছে।
বিএসইসির ২০১৯ সালের ১৫ জুলাইয়ের এক নির্দেশনায় সম্মতি (কনসেন্ট) পেয়েছে এবং ভবিষ্যতে পাবে এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদেরকে সবসময় যৌথভাবে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারন করতে হবে। এই শর্ত পরিপালন ব্যতিত কোন কোম্পানি কোনভাবেই পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারবে না।
একই নির্দেশনায় স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতিত অন্যসব উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারন ছাড়া কোন পরিচালক এবং উদ্যোক্তা ওই কোম্পানির শেয়ার বিক্রয় বা হস্তান্তর বা বন্ধক রাখতে পারবে না বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে কোন পরিচালকের ২ শতাংশ শেয়ার ধারনে ব্যর্থতার কারনে পদ শূণ্য হবে। আর ২ শতাংশ শেয়ার ধারন করে এমন শেয়ারহোল্ডারদের মধ্য হতে পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পূরণ করতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই কাট-অফ প্রাইস নিয়ে হতাশা থেকে ডেল্টা হসপিটাল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ফাইল প্রত্যাহারের বা আইপিও প্রক্রিয়া সামনের দিকে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ১১ টাকায় শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। এটা কোনভাবেই যৌক্তিক প্রাইস হয়নি বলে তারা মনে করেন। তাই ফাইল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মো: সাইফুর রহমান বলেন, ডেল্টা হসপিটালের পরিচালনা পর্ষদ সভায় ফাইল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা তারা নিতে পারে। তারা কাঙ্খিত মাত্রায় দর না পাওয়ায় হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের কাছে চিঠি দিয়েছে। এখন দেখা যাক কমিশন কি সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রসপেক্টাস অনুযায়ি, বর্তমানে ডেল্টা হসপিটালের ৩৩ কোটি ২১ লাখ ২৬ হাজার ৯৪০ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটিতে ৩ কোটি ৩২ লাখ ১২ হাজার ৬৯৪টি শেয়ার রয়েছে। এরমধ্যে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ারের পরিমাণ ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ৭০৪টি বা ৫০.৯৭ শতাংশ। তবে আইপিও পরবর্তীতে তা নেমে আসবে ২৪.১৪ শতাংশে।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস এরইমধ্যে ১১ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। এ কোম্পানিটি আইপিওতে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহে ৩ কোটি ৬৯ লাখ ১৪ হাজার ২১৯টি শেয়ার ইস্যু করবে। যাতে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা দাঁড়াবে ৭ কোটি ১ লাখ ২৬ হাজার ৯১৩টি। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মালিকানা নেমে আসবে ২৪.১৪ শতাংশে।
এরফলে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা শুরুতেই সর্বনিম্ন শেয়ারধারনে ৫.৮৬ শতাংশ বা ৪১ লাখ ৯ হাজার ৪৩৭টি শেয়ার ধারনের ঘাটতিতে পড়বে।
এদিকে আইপিওতে শেয়ার ইস্যুসহ ডেল্টার পরিচালকদের ২ শতাংশ শেয়ার ধারনে পরিচালক পদ টিকিয়ে রাখতে কমপক্ষে ১৪ লাখ ২ হাজার ৫৩৮টি শেয়ার ধারন করতে হবে। কিন্তু ডেল্টার পর্ষদে থাকা ১০ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের মধ্যে ৭ জনের শেয়ারধারন আইপিও পরবর্তীতে ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। যারা বিএসইসির জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ি পরিচালক থাকার যোগ্য না। এছাড়া এই মুহূর্তে শেয়ার কিনে তা পূরণ করারও সুযোগ নেই।
নিম্নে ডেল্টা হসপিটালের আইপিও পরবর্তীতে ২ শতাংশ শেয়ার ধারনে ব্যর্থ পরিচালকদের তথ্য তুলে ধরা হল-
পরিচালকের নাম | শেয়ারধারন | শতাংশ | আইপিও পরবর্তী শতাংশ |
মীর আমজাদ হুসাইন | ১০৪৫৪৯২ | ৩.১৫% | ১.৪৯% |
ড. সৈয়দ মুকাররম আলী | ১৩০৫০০০ | ৩.৯৩% | ১.৮৬% |
হাবিবুর রহমান | ১০০০০০১ | ৩.০১% | ১.৪৩% |
মোহা. শওকত আলী | ১০৬৯৫১১ | ৩.২২% | ১.৫৩% |
মাহমুদ হাসান | ১০১০০০০ | ৩.০৪% | ১.৪৪% |
আবু সালেহ আব্দুল মুইজ | ১০৬৯৫১১ | ৩.২২% | ১.৫৩% |
মিজানুর রহমান সরকার | ১০৬২৬৬৫ | ৩.২০% | ১.৫২% |