আগামী ৩১ মে লেনদেন চালুর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনাপত্তি প্রদানের আলোকে বৃহস্পতিবার (২৮ মে) এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও সরকারের সাধারন ছুটি আর না বাড়ানোর কারনে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ৩১ মে লেনদেন চালু হওয়ার কথা ছিল।
এদিন বিএসইসির নবগঠিত নেতৃত্বের প্রথম কমিশন সভায় পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর বিষয়ে অনাপত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এরইআলোকে ডিএসই ও সিএসই ৩১ মে লেনদেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত লেনদেন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চলবে।
ডিএসই ও সিএসইর আজকের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ২ মাসেরও বেশি সময় পরে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু হতে যাচ্ছে। গত ২৬ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারনে লেনদেন বন্ধ রয়েছে।
লেনদেন চালুর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ নেওয়া হলেও গত ২৪ মে প্রস্তুতি নেওয়ার পদক্ষেপ নেয় ডিএসই। এলক্ষ্যে ডিএসইর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ৩১ মে অফিসে যোগদান করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। ডিএসইর চেয়ারম্যানের নির্দেশনার আলোকে মানব সম্পদ বিভাগ থেকে ডিএসইর সকল বিভাগের প্রধানের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ডিএসইর চেয়ারম্যান আগামী ৩১ মে থেকে লেনদেন চালুর জন্য প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে আগামি ৩১ মে থেকে ডিএসইর নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হবে। এলক্ষ্যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৩১ মে অফিসে যোগদানের অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলার অংশ হিসেবে সরকারের সাধারন ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শেয়ারবাজারও ২ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। যা শুরু হয়েছে গত ২৬ মার্চ। তবে চলমান মহামারিতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের শেয়ারবাজার চালু রয়েছে। তারপরেও বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এই দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় সমালোচনা উঠেছে।
করোনাভাইরাসের কারনে সরকার সর্বপ্রথম গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারন ছুটি ঘোষণা করে। এরপরে প্রথম দফায় ৭দিন সাধারন ছুটি বাড়িয়ে ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয় এবং দ্বিতীয় দফায় ৩দিন সাধারন ছুটি বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করে। এরপরে ১১ দিন বাড়িয়ে সাধারন ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত, আরও ১০দিন বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত এই ছুটি বর্ধিত করা হয়। যা ৫ম দফায় ১১দিন বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়েছিল। আর সর্বশেষ ১৪ দিন সাধারন ছুটি বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ধাপে ধাপে শেয়ারবাজারও বন্ধ ঘোষণা করেছে ডিএসই।
উল্লেখ্য, মতিঝিলের ডিএসই বিল্ডিং এবং ডিএসই এনেক্স বিল্ডিং এর প্রবেশের সময় সরকারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্যবিধি মেন ট্রেকহোল্ডার এবং ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেমন-হ্যান্ড স্যানিটাইজার, থার্মাল স্ক্যানার এবং অন্যান্যের মাধ্যমে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীদের ব্রোকারেজ হাউজে প্রবেশের ব্যবস্থা করেছে৷
আরো উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সকল ব্রোকারেজ হাউজকে কোভিড-১৯ এ সতর্কতার জন্য-কোন হ্যান্ড ও আলিঙ্গণ না করা, পরিমিত দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি বা কাশি বা সন্দেহজনক লক্ষণ সমুহ যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং ক্লায়েন্ট রয়েছে তাদের সনাক্ত করণ, অফিস প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য প্রতিবার হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাকরণ, ব্রোকারেজ হাউজে কর্মচারী এবং ক্লায়েন্টদের মাস্ক সরবরাহ করা, দর্শনার্থীদের অফিসে প্রবেশ করতে নিরুৎসাহিতকরণ, কর্মীদের শিপটিং অফিসের ব্যবস্থা করা এবং অফিসে মুখোমুখি বৈঠক থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন৷
শেয়ারবার্তা / আনিস